নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ জুন, ২০২৫, ০৮:৩১ রাত
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে জাবিতে যুবসমাজের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে জাবিতে যুবসমাজের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ঢাবি প্রতিনিধি ঃ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়-এর ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে যুবসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন ড. মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ, জাবি।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল ইসলাম, প্রক্টর, জাবি বলেন, তামাকের কারণে আমি অপূরণীয় ক্ষতির স্বীকার হয়েছি, ফুসফুস ক্যান্সারে হারিয়েছি আমার বাবাকে। তাই তামাক বিরোধী অভিযানে আমি আপনাদের (তরুণদের) পাশে থাকতে চাই। সর্বপ্রথম, জাবি অ্যান্টি টোব্যাকো ইয়ুথ ক্লাবের সদস্য হিসেবে আপনাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত সকল প্রশাসনিক, শিক্ষা, এবং আবাসিক ভবনকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করতে অবিলম্বে প্রশাসনকে অফিস আদেশ জারি করার দাবি জানাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে তামাক কোম্পানির সকল সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রম (সিএসআর) নিষিদ্ধ করার দাবি জানাতে হবে। আমি আপনাদের পাশে থাকবো, প্রশাসন পাশে থাকবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. সিলভানা ইশরাত, অ্যাডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর, তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, ডর্প। উপস্থাপনায় তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল- এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, তামাকপণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
অধ্যাপক ড. মোঃ মনোয়ার হোসেন, পরিচালক, ওয়াজেদ মিয়া গবেষণা কেন্দ্র বলেন, তামাক কোম্পানির মূল টার্গেট হল তরুণরা। তাদেরকে আকৃষ্ট করতে তারা নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। লোক দেখানো এইসব সামাজিক দায়বদ্ধতা বিষয়ক কর্মসূচী হল তাদের প্রচারণার কূটকৌশল। আমাদেরকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে, বিশেষ করে আপনাদের তামাক কোম্পানির নানা কূটকৌশলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।
ডর্প যুব প্রতিনিধি নাসির বলেন, আমি ২০২১ সাল থেকে তামাক বিরোধী অভিযানের সাথে নিজেকে সংযুক্ত রাখতে পেরে গর্ববোধ করি। এই যাত্রার সঙ্গী হিসেবে আপানারা আজকে যুক্ত হলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আশা করি, আমরা সবাই মিলে অতি শীঘ্রই আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারব।
কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্য দেন মোঃ আজহার আলী তালুকদার, সচিব (অবঃ) এবং উপদেষ্টা, ডর্প।
কর্মশালায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যান্টি টোব্যাকো ইয়ুথ ক্লাবের প্রাথমিক সদস্যদেরকে তামাকের ভয়াবহতা সম্পর্কে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও এর প্রস্তাবিত সংশোধনীর বিষয়ে ধারণা দেয়া হয়। এছাড়াও তামাক কোম্পানির নানা কূটকৌশল সম্পর্কে তাদেরকে অবগত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন