বগুড়ার শেরপুরে বেড়েছে চুরি ডাকাতি ও ছিনতাই, আতঙ্কিত এলাকাবাসী

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে হঠাৎ করেই বেড়েছে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দোকান, বাসা বাড়িতে চুরি এবং ডাকাতির পাশাপাশি বিভিন্ন কায়দায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-ভ্যান চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে।
একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটার ফলে আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। থানা পুলিশ কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না এই সকল চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা। ইতোমধ্যে বাসাবাড়ি, দোকানে চুরি ও ফ্লাট বাসায় ডাকাতি এবং প্রকাশ্যে মহাসড়কে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে অনেকেই হারিয়েছেন সর্বস্ব।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত ১১ জুন দিবাগত রাতে উপজেলার হামছায়াপুর এলাকায় শিক্ষক দম্পতি লিটন-রনজিনার বাড়ির তালা ভেঙে দুই লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ তাদের ব্যাংকের চেকবই নিয়ে যায় চোর চক্র।
অপরদিকে একই রাতে উপজেলার ছোনকা বাজারের মাহি রুমানা ভ্যারাইটি স্টোর নামক একটি দোকানে টিনের চালা কেটে তিন লাখ টাকা ও দুই লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। এছাড়াও একই রাতে ছোনকা বাজারের ভিতরে মাছহাটি সংলগ্ন মুন্টু মিয়ার সোনার দোকানের টিনের বেড়া কেটে চার আনা সোনা চুরি করে নিয়ে গেছে।
ওই দিনেই দুপুর বেলা ধুনট রোড মোড় থেকে অভিনব কায়দায় আবু রায়হান (১৮) নামের এক কিশোরের অটোভ্যান চুরির ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ১০ জুন রাতে উপজেলার সিমাবাড়ী ইউনিয়নে প্রবাসী মিন্টুর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা নিয়ে যায় চক্রটি।
আরও পড়ুনগত ২৮ মে উপজেলার সীমাবাড়ি ইউনিয়নের (বেটখৈর) টাকাধুকুরিয়া গ্রামে গভীর রাতে নাজমুল হক ও তার বাবা হাফিজুর শেখের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাতের কোনো এক সময় ৬-৭ জনের একটি ডাকাত দল প্রথমে নাজমুল হকের ফ্ল্যাটের জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে স্ত্রী শাকিলাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে।
পরে তারা ঘরের বিভিন্ন জায়গা তছনছ করে সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা লুট করে। এরপর ডাকাত দল নাজমুল হকের বাবা হাফিজুর শেখের ফ্লাটে ঢুকে তাদেরকেও জিম্মি করে অচেতন করে ফেলে এবং বাড়িঘর তছনছ করলেও কোন কিছু নেয়ার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
একই দিন ২৮ মে সকাল সাড়ে ১০টায় পৌর শহরের হাজীপুর এলাকায় মহাসড়কে প্রকাশ্যে দিবালোকে সোহরাব হোসেন (৩২) নামের এক বিকাশ কর্মীকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে ছিনতাইকারীরা তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এভাবে একের পর চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ প্রশাসনের তেমন কার্যকরি কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
এছাড়াও অনেক এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে, ব্রিজের ওপরে আড্ডায় লিপ্ত হওয়ার পাশাপাশি নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে যা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করছে। এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈন উদ্দিন বলেন, পুলিশের টিম এই সকল ঘটনার আসামি গ্রেফতারের জন্য মাঠে কাজ করছে। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন