এবার কাবরেরার কৌশল নিয়ে প্রশ্ন?

স্পোর্টস ডেস্ক : এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের হোম ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে বাংলাদেশ। এই হারের জন্য স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কৌশল ও ভুল একাদশ বাছাই এবং মাঠের খেলার চেয়ে ফুটবলারদের বাণিজ্যমুখী হওয়ার প্রবণতাকে দায়ী করা হচ্ছে।
এরআগে ভুটানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে তাজউদ্দিনকে পুরো ৯০ মিনিট খেলিয়েছেন কাবরেরা। অথচ, সিঙ্গাপুর ম্যাচে তাকে একাদশেই রাখেননি কোচ। ভুটান ম্যাচের দ্বিতীয় গোলদাতা সোহেল রানাকে একাদশের বাইরে রাখা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সিঙ্গাপুর ম্যাচের মাত্র দুদিন আগে আপন বড় ভাইকে হারিয়েছেন গোলকিপার মিতুল মারমা। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। ম্যাচে তার প্রভাব পড়েছে ভালোভাবে। বাংলাদেশ যে দুটি গোল হজম করেছে, দুটি গোলেই দায় আছে মিতুলের।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে পরোক্ষে তা স্বীকারও করেছেন এই গোলকিপার। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিপর্যস্ত মিতুলকে একাদশে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেকরা। অনুশীলনে সব সময় সেটপিস নিতে দেখা যায় জামাল ভূঁইয়াকে। মাঝে-মধ্যে সোহেল রানা। ভুটান ম্যাচেও জামালের কর্নারে প্রথম গোলটি করেছিলেন হামজা চৌধুরী। সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগের দিনেও অনুশীলনে সেটপিস নিয়েছেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই দুই ফুটবলার। অথচ, দুজনকেই একাদশে রাখেননি কাবরেরা। কানাডা জাতীয় ফুটবল দলে খেলা শমিত সোমের অভিষেক হয়েছে এই ম্যাচে। শমিত দুই অর্ধেই বেশ কয়েকটি ভালো বল দিয়েছিলেন বক্সে। প্রকৃত স্ট্রাইকার না থাকায় শমিতের সুন্দর পাস থেকে গোল আসেনি।
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে খেলতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী হামজা চৌধুরীর সঙ্গে ছিলেন কানাডা লিগে খেলা শমিত সোম ও ইতালি ফুটবলার ফাহামিদুল ইসলাম। তাদের আগমনেই উন্মাদনা তৈরি হয়েছে দেশের ফুটবলে। বাফুফে সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। ম্যাচটা বাণিজ্যিকীকরণ করতে গিয়ে মাঠের বাইরের দিকেই বেশি নজর দিয়েছিল তারা। ম্যাচের আগে কনসার্ট, বিরতিতে লেজার শো। ক্লোজ ডোরে অনুশীলন করালেও টিম হোটেলে ছবি তোলার জন্য অবাধে যাতায়াত করেছেন সমর্থকরা। প্রস্তুতিতে মনোযোগ না দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচারের দিকেই মনোযোগ দিয়েছেন ফুটবলাররা। বাদ সাধেনি টিম ম্যানেজমেন্ট।
আরও পড়ুনফিফা-এএফসি’র এ ধরনের ম্যাচে খুব বেশি আনুষ্ঠানিকতা দেখা যায় না কোথাও। কিন্তু বাফুফে এই ম্যাচটিকে সামনে রেখে যা করেছে, তা আসলে সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। ম্যাচকে টাকা আয়ের হাতিয়ার বানাতে গিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে সাধারণ দর্শকদের। টিকিটের দাবিতে দিনের পর দিন আন্দোলন করেছেন যারা, তারা টিকিট পাননি। পেয়েছেন অভিজাত এলাকার ক্লাব ও কমিউনিটি ক্লাবের কর্মকর্তারা। পেশাদার লিগের ক্লাবগুলোকেও চাহিদামতো টিকিট দেওয়া হয়নি। ফুটবলারদের ব্যবহার করা হয়েছে নানাভাবে। বিশেষ করে দুই প্রবাসী হামজা চৌধুরী ও শমিত সোমকে। যারাই চেয়েছেন তারাই হোটেলে ছবি তুলতে পেরেছেন হামজা-শমিতের সঙ্গে। স্পন্সরদের খুশি করতে তাদের ডেকে এনে ছবি তুলতে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিরক্ত জাতীয় দলের প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। এত ইন্টারভিউ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামজাদের উপস্থিতি মোটেও ভালো চোখে দেখেননি স্প্যানিশ কোচ।
মন্তব্য করুন