জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান চান এলাকাবাসী
সামান্য বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় বগুড়ার বেশিরভাগ রাস্তাঘাট ও এলাকা, পৌরবাসীর ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার : নিম্নচাপের কারণে সৃষ্ট টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে বগুড়া শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি টিনপট্টি, বাদুরতলা, মালতিনগর, মালগ্রাম, মালগ্রাম দক্ষিণপাড়া, বন বিভাগের সামনে, ফুলতলা বাজার, সবুজবাগ, সেউজগাড়ী, জামিলনগর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আজ শুক্রবার (৩০ মে) দুপুর পর্যন্ত লাগাতার বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও আজ শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলের দিকে অনেক এলাকার পানি সরে গেছে, তবে কিছু নিচু এলাকায় এখনো পানি জমে রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সবুজবাগ তাপসি রাবেয়া স্কুলের আশেপাশে, কৈগাড়ী, ফুলদীঘি এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এইসব এলাকায় দ্রুত কার্যকর ড্রেনেজ বা স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা করা হোক, যাতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি আজ শুক্রবার (৩০ মে) দুপুর পর্যন্ত চলেছে। শুরুর দিকে হালকা-মাঝারি অবস্থা থাকলেও পড়ে ভারি বৃষ্টিতে ভেসেছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়। এতে কোথাও কোথাও কোমর সমান পানিও উঠে গেছে। এতে বেশ ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে ঘরমুখো নানা কর্মক্ষেত্রের মানুষদের।
এ ব্যাপারে কৈগাড়ী এলাকার ইলিয়াস হোসেন করতোয়া’কে জানান, বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায় এবং তা সহজে সরানো যায় না। আবহাওয়া ভালো থাকলে কয়েকদিনের রোদে পানি শুকিয়ে যায়, কিন্তু পানি বের হওয়ার কোনো ড্রেনেজ বা স্যুয়ারেজ লাইনের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকাটি প্রায়ই পানির নিচে ডুবে থাকে। এতে করে রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বাড়িঘরসহ সবকিছুই পানিতে নিমজ্জিত থাকে, যা চলাচলে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করে।
সবুজবাগ এলাকার ময়েন উদ্দিন করতোয়া’কে বলেন, বৃষ্টি হলেই হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে। এতে এই এলাকাতে মানুষ বাড়ি ভাড়া নিতে আসে না। বছরের অর্ধেক সময় বাড়ি ফাঁকা পড়ে থাকে। ড্রেন এবং বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে মানুষ চলাচল করতে পারে না। আজ শুক্রবার (৩০ মে) মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় মুসুল্লিদের। জুতা খুলে হাতে নিয়ে এই ময়লা পানি পেরিয়ে বাসায় যেতে হয়েছে। রাস্তার এখানে সেখানে খানাখন্দ। কখন কোন বিপদ ঘটে সেই ভয়ে থাকেন এলাকাবাসি।
আরও পড়ুনবৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাস। এ ভোগান্তির কথা জানিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন করতোয়া’কে বলেন, অল্প একটু বৃষ্টি হলে ক্যাম্পাস ডুবে যায়, হাঁটার মতো অবস্থা থাকে না। এব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে মনে করেন এই শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন করার ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এর নাগরিক সেবা শূণ্যের কোঠায় জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে বগুড়া শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এছাড়াও কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন না করেই বড় বড় বিল্ডিং নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছেন। সেসব এলাকার পানি অপসারণের কোন ব্যবস্থা নেই।
বিশাল জনগোষ্টির ব্যবহারের পানি যাওয়ার জন্যই কোন ড্রেন নেই সেখানে টানা বৃষ্টির পানিতে তাইতো তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ এলাকা। তিনি বিশেষ করে বগুড়া শহরের জামিল নগরের কথা উল্লেখ করেছেন। বগুড়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে এই বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত দুই দিনে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৬৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার।
মন্তব্য করুন