মিষ্টি মানেই সবসময় ‘বিষ’ নয় : জানুন দিনে কী পরিমাণ চিনি খাওয়া নিরাপদ?
আমাদের চায়ের কাপ থেকে ব্রেকফাস্টের জুস—অজান্তেই দিনে ঢুকে যায় অতিরিক্ত চিনি। WHO জানাল নিরাপদ সীমা কত এবং শরীরে কীভাবে বাড়ে ঝুঁকি।
মিষ্টি ছাড়া কি দিন চলে? চায়ের কাপে এক চিমটি, ব্রেকফাস্টে জুস, দুপুরে দই, সন্ধ্যার বিস্কুট—অজান্তেই প্রতিদিন শরীরে ঢুকে যাচ্ছে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি চিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাদের টানে আমরা বুঝতেই পারি না কখন শরীরের ক্ষতি শুরু হয়ে যায়। তাই প্রশ্ন হচ্ছে—দিনে ঠিক কতটা চিনি খাওয়া নিরাপদ?
WHO কী বলছে?
একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক মোট ক্যালরির ৫–১০% আসা উচিত চিনি থেকে।
পুরুষদের জন্য নিরাপদ সীমা ৯ চা–চামচ, মহিলাদের ৬ চা–চামচ।
সাধারণভাবে দিনে ৬ চা–চামচ (প্রায় ২৫ গ্রাম) চিনি তুলনামূলক নিরাপদ।
দিনে ৫০ গ্রাম বা ১২ চা–চামচের বেশি চিনি খাওয়া শুরু করলেই বাড়তে থাকে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি।
অতিরিক্ত চিনি খেলে শরীরের উপর কী প্রভাব পড়ে?
🔹 ১. ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতা
চিনি শরীরে দ্রুত ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়। কোমর ও পেটে জমে বাড়ায় মেদ।
🔹 ২. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
চিনি বাড়লে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়। দীর্ঘদিন ধরে বেশি চিনি গ্রহণ ডায়াবেটিসের পথ খুলে দেয়।
🔹 ৩. হৃদরোগের আশঙ্কা
অতিরিক্ত চিনি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে।
🔹 4. দাঁতের ক্ষয়
চিনি ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য। ফলে দাঁতের ক্যাভিটি ও ইনফেকশনের সম্ভাবনা বাড়ে।
🔹 5. ত্বকের ক্ষতি ও ক্লান্তি
চিনি কোলাজেন ভেঙে দেয়, ফলে ত্বকে অকাল বলিরেখা পড়ে। রক্তে শর্করা ওঠানামা করলে ক্লান্তি বাড়ে।
দৈনন্দিন খাবারে লুকিয়ে থাকা চিনি
আমরা বুঝতেই পারি না কখন চিনি বাড়তি খেয়ে ফেলি—
চা/কফি (২ কাপ) → কমপক্ষে ২ চামচ চিনি
জুস/সফট ড্রিঙ্ক (১ গ্লাস) → ৪–৫ চামচ
বিস্কুট, কেক, মিষ্টি → ৩–৪ চামচ
স্বাদের জন্য একটু একটু করে খাওয়া মিষ্টি দিনের শেষে হয়ে ওঠে ভয়ংকর।
তাহলে দিনে ঠিক কতটা চিনি খাবেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে—
👉 সারা দিনে ছয় চা–চামচের বেশি নয়।
এটাই আপনাকে রাখবে সুস্থ, ফিট এবং রোগের ঝুঁকি থেকে দূরে।
মিষ্টি খাওয়া মানেই বিষ নয়। তবে সীমা ছাড়িয়ে গেলে শরীরের ক্ষতি অস্বীকার করা যায় না। তাই চায়ের কাপে চিনি মেশানোর আগেই ভাবুন—আজ মোট কতটা চিনি খেয়েছেন। সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147591