গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: হরেক স্বাদ ও জাতের আম বেচাকেনায় মুখর হয়ে উঠেছে আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর আম বাজার। রহনপুর রেল স্টেশন চত্ত্বরের এ আম বাজারে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত আম বেচাকেনা করছে আম ব্যবসায়ীরা। তবে সকালের দিকে কিছুটা আমের আমদানি বাজারে কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে আম বাজারে আম আমদানি বেড়ে যায়। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানের আম বাগান থেকেও সারাদেশে সরাসরি আম সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে গুটিজাতের প্রধান আম গোপালভোগের সরবরাহ অনেকটা কমে গেছে। এখন বাজারে খিরসাপাতি (হিম সাগর), লেংড়া,
কালীভোগ, লক্ষনাসহ বিভিন্ন গুটি জাতের আমের সরবরাহ রয়েছে। করোনার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা মৌসুমী আম ব্যবসায়ী হিসেবে অনলাইনে আমের অর্ডার ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনলাইন ক্রেতাদের আম সরবরাহ করছে। এ আম বাজারের বিভিন্ন আড়তগুলোতে আম প্যাকেটজাত করার কাজে শত শত দিনমজুর জড়িত রয়েছে। এছাড়া আম বাজারগুলোতে সমাগম বেড়েছে বিভিন্ন জেলার ক্রেতা-বিক্রেতার। বাগান থেকে হাট-বাজার সর্বত্রই আম নিয়ে চলছে ব্যবসায়ীদের বিরামহীন কর্মযজ্ঞ। আম ব্যবসায়ীরা বলছেন, অসময়ে বৃষ্টি ও আম্পানের কারণে বাগানগুলোতে চলতি মৌসুমে কম ফলন হয়েছে। আর আমের সরবরাহ কম থাকায় আম বাজারে আমের দাম একটু বেশি। বাজারে হিমসাগর আম প্রতি মণ বেচাকেনা হচ্ছে ৩ হাজার থকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দরে। আর গুটি আম বেচাকেনা হচ্ছে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা দরে। এবার বাগানগুলোতে আম কম থাকায় আমের ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে বলছেন ব্যবসায়ীরা।
গোমস্তাপুর উপজেলা আম চাষী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, করোনাভাইরাসের কারণে বিকাল ৪ টার মধ্যে আম বাজার বন্ধ করে দেয়ায় বাইরে থেকে আসা আম ব্যবসায়ীরা চাহিদা মত আম ক্রয় করতে পারছে না। এছাড়া তিনি অভিযোগ করেন, সম্প্রতি আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত গোমস্তাপুর উপজেলার আমচাষীদের সরকারের প্রণোদনার জন্য তালিকা করা হয়েছে তাতে আমাদের কোন পরামর্শ নেয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আম চাষীদের তালিকা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আম চাষীদের নিরাপদ আম উৎপাদান ও বাইরে থেকে আম ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা ব্যাপারীরা যাতে স্বাস্থবিধি মেনে চলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাজারে বিষমুক্ত আম সরবরাহ নিশ্চিত করতে মনিটরিং কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য এবার উপজেলায় ৪ হাজার ১শ ৭৫ হেক্টর জমিতে ১৯ জাতের আমের চাষ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪৫ হাজার ৯শ ২৫ মেট্টিক টন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।