রংপুর প্রতিনিধি: প্রায় ৫০ বছর আগের ওয়্যারিং দিয়ে চলছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের জন্য স্থাপিত আধুনিক যন্ত্রপাতির লোড নিতে না পারায় সেখানে ঘটছে ছোট বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা। গত এক মাসে দুই দফা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে হাসপাতালটিতে। এছাড়া হাসপাতালে রয়েছে মাত্রারিক্ত ৩শ’ এয়ারকন্ডিশন।
বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলীরা বিদ্যুতের সর্টসার্কিটের কারণে অগ্নিকান্ডের জন্য মাত্রাঅতিরিক্ত এয়ার কন্ডিশনের ব্যবহারকেও দূষছেন। এ কারণে প্রায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ ঘটছে অগ্নিসংযোগ।
জানা গেছে, ১৯৭৬ সালে ৫০০ শয্যার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য পুরো হাসপাতালটি ওয়্যারিং করা হয়। পাশেই বসানো হয় ১ হাজার ২৫০ কেভিএ (কিলোভোল্ট অ্যাম্পিয়ার্স) বিদ্যুৎ। এরপর আরও একটি ১২৫০ কেভিএ এবং ৫০০ কেভিএ জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালের এই বিদ্যুতের সংযোগ সংস্কারে মন্ত্রণালয়ে অর্থ চেয়ে পত্র পাঠালেও পর্যাপ্ত অর্থ পাচ্ছে না হাসপাতালটি। ফলে যে কোন মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, হাসপাতালের পরিধি বৃদ্ধি, ভারি যন্ত্রপাতি স্থাপন, এসির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পুরনো ওয়ারিং করা বিদ্যুতের সংযোগ লোড নিতে পারছে না। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ৫শ’ বেড থেকে ১ হাজার বেডে উন্নিত করা হয় হাসপাতালটি। বিদ্যুতের ব্যবহার বহুগুণে বৃদ্ধি পেলেও সংযোগের ওয়্যারিং আছে সেই আগের মতোই।
রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, বিদ্যুতের সর্টসার্কিট থেকে গত তিন বছরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিদ্যুতের লুস কানেকশন নড়বড়ে সংযোগ থেকেই ছোট বড় ১০টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে বেশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে গাইনি ওয়ার্ডে। সর্বশেষ গত শনিবার মধ্যরাতে হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে বিদ্যুতের মেইন ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ডে (এমডিবি) অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এই বোর্ডে অগ্নিসংযোগ কীভাবে ঘটলো তা ঠিক করে বলতে না পারলেও গণপূর্ত বিভাগ ধারণা করছে সংযোগের ওপর বাড়তি লোড পড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রংপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাজিয়া সুলতানা জানান, বিদ্যুতের সংযোগগুলো পুরনো হওয়ায় ওভার লোড নিতে পারছে না সংযোগগুলো। সে কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে। এছাড়া যেসব এসি এবং ভারি যন্ত্র বসানো হয় তা অনেক সময় আমাদের জানার বাইরে। এসব সংযোগ দেয়ার জন্য আমাদের জানালে আমরা সেটা বলতে পারতাম কোথাও কীভাবে লাগাতে হবে, কোন সংযোগ সেটার লোড নিতে পারবে কী পারবে না।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম জানান, সংস্কার প্রয়োজন। প্রতি বছর কিছু কিছু হয় কিন্তু যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু হচ্ছে না। আমি গণপূর্ত বিভাগকে বলেছি হাসপাতালের যে বৈদ্যুত্যিক সাপলাই সিস্টেম রয়েছে সেগুলোর পুরো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটা রিপোর্ট দিতে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।