মহিলারা কি ডিপ্রেশনের শিকার বেশি হন?

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৩, ০৪:৫৫ দুপুর
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৩, ০২:৪৫ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

ডিপ্রেশন! সব বয়সি নারী বা পুরুষের মাঝেই এটি দেখা যায়। অনেকে আবার বোঝেনই না যে তারা ডিপ্রেশনে আছেন।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবির মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার আছে কি না তা বোঝার জন্য দুটো মুখ্য উপসর্গ আছে। প্রথমত দেখতে হবে, এটা মনখারাপ নাকি ডিপ্রেশন? মনখারাপ দু’-এক দিনে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু মনখারাপ যদি দু’সপ্তাহ বা তার বেশি স্থায়ী হয়, তা হলে বুঝতে হবে তা ডিপ্রেশনের দিকে এগোচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, যে পৃথিবীর প্রায় ১২১ মিলিয়ন মানুষ ক্রনিক ডিপ্রেশনে আক্রান্ত৷ আর জার্মানিতে এই সংখ্যা বর্তমানে চার মিলিয়ন৷ অর্থাৎ, জার্মান জনগণের প্রায় চার ভাগ ডিপ্রেশনে ভুগছেন৷ ২০০০ থেকে ২০০৪-এর মধ্যবর্তী সময়ে জার্মানির প্রায় ৪২% মানুষ নাকি এই অসুখের শিকার হয়েছেন৷

সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, যে ১৯৯৩ সালে এই সংখ্যা যদি ৪১, ৪০৯ হয়ে থাকে, তবে ২০০৭-এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩, ৮৮৮-এ৷  

আমাদের দেশে মহিলা ও পুরুষদের মধ্যে ডিপ্রেশনের অনুপাত ২:১। পুরুষদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক মহিলা ডিপ্রেশনের শিকার হন।

আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অবনতি ঘটে চলেছে দিন দিন৷ তার সঙ্গে বাড়ছে বেকারত্ব৷ হ্রাস পাচ্ছে মানুষের আয়ও৷ ফলতঃ তাদের পরিবারবর্গকেও আর আগের মতো সাপোর্ট করতে পারছেন না তারা৷ সুতরাং, ডিপ্রেস্টড মানুষের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে ৷ এর সঙ্গে ডিপ্রেশন নিয়ে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে আগের তুলনায়৷ কাজেই, আগের তুলনায় অনেক বেশি মানুষ এখন ডিপ্রেস্টড বলে মনে হচ্ছে৷

মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল শুরু হওয়ার সময়, সন্তান জন্মের পর, মেনোপজ়ের আগে বা পরেও ডিপ্রেশনের শিকার হন মহিলারা সামাজিক প্রভাবও কারণ। এখন যেহেতু বহু মহিলাই ওয়র্কিং, ফলে পারিবারিক ও কর্মজগৎ... এই দুইয়ের স্ট্রেসও তাঁকে ডিপ্রেশনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। শরীর ও মন দুইয়ের উপরেই অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। বিভিন্ন ফ্যাক্টরের যোগবিয়োগেই তৈরি হয় মানসিক অবসাদ

মনখারাপের স্থায়িত্ব, আগ্রহ হারিয়ে ফেলার সঙ্গে এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলেই বুঝতে হবে যে, ডিপ্রেশন তাঁকে গ্রাস করছে। তখনই কিন্তু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সময়ে বন্ধুবান্ধব বা মা-বাবার কাছে রোগী স্বীকার করেন যে, তাঁর মন ভাল নেই। তখন অনেকেই ভাবেন, ওর কীসের অভাব আছে? বা কী এমন ঘটেছে যে মন ভাল নেই কেন? এ সব ভেবে তা উড়িয়ে দেন। কোনও অভাব না থাকলেও ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে একটি মানুষের জীবন ঠিকঠাক চলছে মনে হলেও কিন্তু ডিপ্রেশন বাসা বাঁধতে পারে তাঁর মনে।

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়