নিত্য পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২২, ০১:২৩ রাত
আপডেট: আগস্ট ১৬, ২০২২, ০১:২৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সীমাহীন উত্তাপ বিরাজ করছে নিত্য পণ্যের বাজারে। প্রায় সব ধরনের ভোগ্য পণ্যের লাগামহীন দামে রীতিমতো দিশেহারা সাধারণ ক্রেতারা। চড়া দামের ফলে প্রয়োজনের অর্ধেক পণ্যই কিনতে পারছেন না বেশির ভাগ ক্রেতা। কোটি কোটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার তাদের সংসারের খাবারের ছোট বাজেট কাট ছাঁট করে আরও ছোট করার চেষ্টা করছেন। সংসারের খরচের হিসাবে বারবার কাঁচি চালাতে গিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বেড়েছে জ্বালানি সব তেলের দাম। এরই মধ্যে নতুন করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা উঠেছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে সংসারের খরচ আরও এক ধাপ বাড়বে। অর্থনীতি ও সমাজ বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ পণ্য মূল্যের উর্ধ্বগতি ও আয়ে ঘাটতির কারণে খাবারের ব্যয় কমানো মানুষের সংখ্যা ৫০ শতাংশে ছুঁয়েছে। জ্বালানি তেলের পর নতুন করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়লে তা এ কোটাও ছাড়িয়ে যাবে।

নানা কারণেই যখন জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে-তখন বিষয়টি অত্যন্ত ভীতিপ্রদ বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য। এ ছাড়া বলা দরকার নানা অজুহাত দেখিয়ে চাল, ডাল, আটা, তেল, কাঁচা মরিচ সহ সবজি মাছ-মাংস, মুরগি, ডিম, সাবানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ানোর পাল্লায় নামেন ব্যবসায়ীরা- এমন বিষয় বহুল আলোচিত। অথচ এ ক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে যদি স্বল্প আয়ের মানুষ হিমশিম খায় তবে তা কতটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামের উর্ধ্বগতিতে এখন অনেকের জীবন-সংগ্রাম আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

পরিবহণ খরচ থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত দামে দিশেহারা মানুষ। বেশির ভাগ নিম্ন-মধ্য আয়ের মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এটাও আলোচনায় এসেছে, সরকারের উচিত দীর্ঘ মেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া। কেননা সীমিত আয়ের মানুষ এখন প্রচন্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ধিত দাম শেষ পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাজারে এবং সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলবে। সঙ্গত কারণেই যে বিষয়গুলো আলোচনায় আসছে তা সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়, তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয় বারবারই আলোচনায় আসে। অথচ নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে এমনটি জানা গিয়েছিল, প্রয়োজনীয় বিভিন্ন খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ানোর পাল্লায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকে বলেন এসব হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রুত ধনী হবে এটা তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। তারা একেক সময় একেক অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ায়। তাদের অজুহাতের শেষ নেই। আর আগের অবস্থায় ফিরে যায় না। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি।

বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোন পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তা খুব বেশি কাজে আসেনি। এতে বোঝা যায়, অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে। সরকারকে অবিলম্বে তা কাটিয়ে উঠতে হবে। নিত্য পণ্যের দাম সহনীয় রাখা জরুরি। জ্বালানি তেলের দাম-বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দাম আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে সরকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নেবে, এটাই সবাই আশা করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়