পোশাক রপ্তানি আয়ে ধস

পুরো বিশ্বই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে ঘিরে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস তৈরি পোশাক খাত। মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৬ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। দেশের প্রধান রপ্তানি খাতের আয়ে যদি ধস নামে তবে তা কতটা উদ্বেগের সেটা আমলে নেওয়া প্রয়োজন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
পোশাক রপ্তানি আয় নির্ভর করছে দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যবসায়িক পরিস্থিতির ওপর। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত পোশাক রপ্তানি ‘ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক বিশেষ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। পশ্চিমা দেশ বলতে ইউরোপ, আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলো বোঝায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকালীন লকডাউনের ফলে দেশের পোশাক রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে। লকডাউন প্রত্যাহারের পর পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানি গতিশীল হতে শুরু করে।
কিন্তু এর মধ্যেই গত নভেম্বর শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। পোশাক রপ্তানির প্রায় ২০ শতাংশ হচ্ছে আমেরিকাতে। ৫৪ শতাংশ হচ্ছে অন্যান্য দেশে। মোট রপ্তানির মধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে ৭৪ শতাংশ পোশাক রপ্তানি এখন হুমকির মুখে। পোশাক রপ্তানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা এখন ৬০ শতাংশের বেশি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। আগে এ সময় শতভাগ লাগানো যেত। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় পোশাক খাতকে সহায়তা করতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
এগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি সরকার থেকে অন্যান্য সহযোগিতাও দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, পোশাক খাত ধীরে ধীরে এর উৎপাদন সক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবে। তবে এটি নির্ভর করছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যবসায়িক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তার ওপর। আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট সংকটকে সামগ্রিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।