চালকদের মাঝে স্বস্তি
ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সবগুলো স্ট্যান্ডে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিভিন্ন সংগঠনের নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিন অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করতো প্রভাবশালী একটি চক্র।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার মধ্য দিয়ে এবার এসব স্ট্যান্ডের সেই চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় পরিবহন চালকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আজ বুধবার (৭ আগস্ট) সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, ধুনট থেকে বগুড়া, শেরপুর, সোনামুখী, ঢেকুরিয়া, গোসাইবাড়ি, জোড়শিমুল, সোনাহাটা, মথুরাপুরসহ বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলা করে।
এসব অটোরিশায় এলাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন। এসব স্ট্যান্ডে অটোরিকশা চালকদের কাছে থেকে সড়কের দূরত্ব অনুযায়ী ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হতো, যা দৈনিক হিসেবে লক্ষাধিক টাকা।
এসব টাকার ভাগ যেতো অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতা, ক্ষমতাসীন দলের নেতা, স্থানীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশের অসাধু সদস্যের পকেটে। এসব সড়কে চলাচল করতে চালকদের প্রতিদিন দিতে হয়েছে মোটা অঙ্কের এই চাঁদা। অন্যথায় তাদের সিরিয়াল না দেওয়াসহ কোনো সড়কেই চলাচল করতে দেওয়া হতো না।
নানা ভাবে নির্যাতন করতো। উপায়ন্তর না দেখে চালকরাও বাধ্য হয়েই চাঁদা দিয়ে সড়কে চলাচল করেছে। টাকা দিলেই ঘুরতো গাড়ির চাকা। বছরের পর বছর এটা অলিখিত একটি নিয়মে পরিণত হয়েছিল। স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজির কারণে অনেকটাই অতিষ্ঠ ছিল খেটে খাওয়া ক্ষুদ্র যানবাহনের চালক এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।
এ অবস্থায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর থেকে এসব স্ট্যান্ডে চাঁদা আদায় বন্ধ রয়েছে। এসব স্ট্যান্ড কিংবা সড়কের মোড়ে মোড়ে টেবিল পেতে কিংবা লাঠি হাতে চাঁদাবাজদের আর দেখা যাচ্ছে না।
রাজনৈতিক নেতা, পারিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাসহ পুলিশ স্ট্যান্ড ও সড়কের মোড়গুলো থেকে উধাও হয়ে গেছে। ফলে চালকেরা বর্তমানে স্বাধীনভাবে সড়কে চলাচল করছেন। এতে করে এসব চালকদের মাঝে ফিরে এসেছে স্বস্তি।
অটোরিকশা চালকেরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাঁদা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পোষায় না। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে চাঁদা আদায়কারীদের আর দেখা যাচ্ছে না। এখন গাড়ি চালিয়ে মোটামুটি পকেটে কিছু টাকা জমা থাকছে। অনেকটাই স্বস্তিতে আছি। আমাদের প্রত্যাশা সব সময়ই যেন চাঁদা না দিয়ে গাড়ি চালাতে পারি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।