বগুড়ায়

দাদন ব্যবসায়ীর ফাঁদে  নিঃস্ব এক বীর মুক্তিযোদ্ধা 

প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৩, ০২:৪৫ রাত
আপডেট: মে ১৯, ২০২৩, ০২:৪৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : দাদন ব্যবসায়ীর ফাঁদে পড়ে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে এখন নিঃস্ব বগুড়ার গাবতলী উপজেলার তেলিহাটা সুখানপুকুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহফুজুর রহমান। তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার জন্য দাদন ব্যবসায়ী গাবতলীর বাইগুনির মুকুল হোসেন, সাহবাজপুর গোবিন্দগঞ্জের লাভলু বেপারী, মাহবুবুর রহমান কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেন। দাদন ব্যবসায়ীরা ওই ঋণের বিপরীতে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ করেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই অভিযোগ করেন।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ওই দাদন ব্যবসায়ী তার মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্রসহ সোনালী ব্যাংক সোনাতলা শাখার ১৫টি চেকের পাতায় স্বাক্ষর করে নেয়। তারপর ঋণ পরিশোধের নামে ব্যাংক থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে। পরে তারা স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে ৭০ পাতার চেকের বই তুলে নেয়। সেই চেকের পাতা দিয়ে তার নামে থাকা মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ও বোনাস তারা তুলে আত্মসাৎ করে। তিনি তার মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধের পর বর্ধিত টাকা ফেরত চাইতে গেলে দাদন ব্যবসায়ীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ইতিমধ্যে টাকার অভাবে তার স্ত্রী ও সন্তান মারা যায়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিলেও তিনি কোন প্রতিকার পায়নি। পরবর্তীতে তারা তার স্বাক্ষর জাল করে এবং মোবাইল নম্বর বদলিয়ে তার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ও বোনাস তুলে আত্মসাৎ করে। পরে দাদন ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের যোগসাজসে ব্যাংক থেকে মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র জমা দিয়ে আরও ৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে। একই কায়দায় স্বাক্ষর জাল করে পরে এই চক্র ১০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে। এভাবে তারা পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট জমা দিয়ে স্বাক্ষর জাল করে সর্বমোট ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে। গত ১৩ এপ্রিল দাদন ব্যবসায়ী মুকুল ও লাভলুর কাছে তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও তার ঋণ পরিশোধের পর বাকি টাকা ফেরত চাইতে গেলে তারা তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এক পর্যায়ে তারা তাকে মারপিট করে। তখন স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে বিভাগে ভর্তি করেন। এ ঘটনার পর তিনি বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরপর  ওই দাদন ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত তাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বর্তমানে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
তিনি তার জীবনের নিরাপত্তা ও তার মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র ফেরতসহ তার নামে স্বাক্ষর জাল করে তোলা মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বোনাস ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন। 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়