দুপচাঁচিয়া’র ৫৩৬ জন শ্রমিক দুই মাসেও ৪০ দিন কর্মসূচির ভাতা পাননি

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৩, ০৯:৪৪ রাত
আপডেট: মার্চ ১৮, ২০২৩, ০৯:৪৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অধীনে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (৪০ দিনের কর্মসূচির) আওতায় নিয়োজিত ৫৩৬ জন শ্রমিক দুই মাসেও তাদের পরিশ্রমের ভাতা পাননাই। ভাতা না পাওয়ায় এইসব শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২০২২-২৩ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (৪০ দিনের কর্মসূচির) আওতায় উপজেলায় ৮৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৫৩৬ জন শ্রমিককে জনপ্রতি প্রতিদিন ৪শ’ টাকা মজুরি হারে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিকরা গত ২৬ নভেম্বর ২০২২ স্ব স্ব ইউনিয়নে ওই কর্মসূচির আওতায় গ্রামের মাটির রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কাজ শুরু করেন।

নির্ধারিত সময় গত ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ সুষ্ঠু ভাবে কাজ সমাপ্ত করে। সরকারি নিয়মানুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত শমিকদের কাজ চলাকালিন সময়ে তিন কিস্তিতে তাদের ভাতা পরিশোধ করার নিয়ম থাকলেও উপজেলার নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিকরা তাদের প্রথম কিস্তির ২১ লাখ ৪৪ হাজার টাকার ভাতা পেলেও দ্বিতীয় কিস্তির ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও তৃতীয় কিস্তির ৪১ লাখ ২১ হাজার টাকা দু’মাসেও পায়নি।

আজ শনিবার (১৮ মার্চ) এ বিষয়ে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের ৪০ দিন কর্মসূচির শ্রমিকদের সরদার মাঝিন্দা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে শাহিন আলমসহ অনেকেই জানান, তারা দৈনন্দিন কাজ করে জীবন জিবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিছুটা ভালো থাকার আশায় ৪০ দিনের কর্মসূচিতে নিয়োগ নিয়েছিলেন, কাজও করেছেন। কিন্তু প্রথম কিস্তির টাকা পেলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তির ভাতা না পাওয়ায় তা ওই সময়ে স্থানীয় ভাবে কিস্তি নিয়ে সংসার চালিয়েছেন।

দীর্ঘ দু’মাসেও তাদের ভাতা না পাওয়ায় কিস্তির সুদের হার বাড়ছে। অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গোবিন্দপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন মল্লিক জানান, ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় তার ইউনিয়নে ১৪৪ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। তাদের কাজগুলো ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মনিটরিং করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের বিল তৈরী করে যথা সময়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে প্রেরণ করেছেন।

এক্ষেত্রে আর তাদের করার কিছুই নেই। শ্রমিকরা তাদের ভাতা না পাওয়ায় অনেকেই কষ্টেই আছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এএইচ এম আশরাফুল আরেফিন জানান, ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় প্রথম কিস্তির বিল যথাসময়ে শ্রমিকদের পরিশোধ করলেও দিত্বীয় কিস্তির ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও তৃতীয় কিস্তির ৪১ লাখ ২১ হাজার টাকার সর্বমোট ৬২ লাখ ১১ হাজার ৪শ’ টাকার পৃথক দুটি চাহিদা যথাসময়ে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণও করেছেন। শ্রমিকদের এই ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ হয়ে থাকে।

কারিগরি সমস্যার কারণে ওই ভাতা প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন। তারা স্বল্পসময়ে বিল পরিশোধের আশ্বাসও দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন জিহাদী জানান, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৫৩৬জন শ্রমিক কাজ করেও তাদের ভাতা না পাওয়ায় বেশ বিব্রত অবস্থায় রয়েছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত তাদের বিল পরিশোধের ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়