প্রতিদিন অপচয় প্রায় ৩ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: বাড়ছে বিদ্যুতের অপচয়, প্রতিদিন লাগছে প্রায় ৩ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ। সেই সাথে নেই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, নেই কোন শৃঙ্খলা। যত্রতত্র পার্কিং করে সৃষ্টি করে যানজটের। আর ট্রাফিক আইন মেনে না চলায় প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। কুড়িগ্রাম জেলায় ৪০ হাজারের বেশি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, ভ্যান, মিশুক ও রিকশা বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অলিগলি থেকে মহাসড়কে। কুড়িগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতাল সংলগ্ন বিদ্যুৎ অটো সেন্টারের মালিক আব্দুর রাজ্জাক জানান, ব্যাটারি চালিত বড় অটো রিকশা (ইজিবাইক) ৫টি ব্যাটারি চার্জে প্রতিদিন লাগে ৮-১০ ইউনিট বিদ্যুৎ, মিশুক ও রিকশায় লাগে ৪-৫ ইউনিট বিদ্যুৎ।
কুড়িগ্রাম জেলা ব্যাটারি চালিত রিকশা মিশুক ও ভ্যান সমিতির সভাপতি আবদার হোসেন বুলু জানান, জেলায় ব্যাটারি চালিত বাহনের সংখ্যা ৪০ হাজার ৫০০টি। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম সদরে ৮ হাজার, উলিপুরে ৮ হাজার, রাজারহাটে ৪ হাজার, চিলমারীতে ২ হাজার, রৌমারীতে ২ হাজার, ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় প্রায় ৯ হাজার, নাগেশ্বরীতে ৭ হাজার এবং রাজিবপুর উপজেলায় প্রায় ৫০০টি। এ হিসেবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। একটি বাহনে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যয় হয় ওই বিদ্যুৎ দিয়ে ১২টি লাইট (বাল্ব) জ্বালানো যাবে। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী হাইওয়ে রাস্তায় এসব বাহন চলতে পারবে না। নেই চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। ফলে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, সারাদেশে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক এ পেশায় জড়িত। তাদের ওপর নির্ভর করছে প্রায় ২ কোটি মানুষের রুটি-রোজি।
কুড়িগ্রাম জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বকসী বলেন, অবৈধ যানবাহন ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও রিকশা। যানজট, দুর্ঘটনা, এবং বিদ্যুৎ ঘাটতির বড় কারণ এখন ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও রিকশা। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এসব অবৈধ এবং অনুমোদনহীন বাহন দাপটের সাথে চলছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিকার। ফলে বৈধ যানবাহনের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কুড়িগ্রাম থেকে উলিপুর-চিলমারী রুট, কুড়িগ্রাম-রাজারহাট-উলিপুর রুটে অভ্যন্তরীণ বাস চলাচল অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। আর বাস মালিকদের গুনতে হবে লোকসান।
কুড়িগ্রাম জেলার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জাহিদ সারওয়ার জানান, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও রিকশা যেহেতেু ভিকেল এ্যাক্টের আওতায় পরে না তাই আমাদের কাছে কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে এসব বাহন যানজট এবং দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ী। কুড়িগ্রাম বিআরটিএ বিভাগের ইন্সপেক্টর মাহবুবুর রহমান জানান, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও রিকশার পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। আমাদের আইনের আওতায়ও নেই এসব বাহন।
কুিড়গ্রাম নেসকো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আলিমুল ইসলাম সেলিম জানান, যারা বৈধভাবে সংযোগ নিয়ে চার্জিং ব্যবস্যা করছেন সেটি ছাড়া কোন অটোরিকশাচালক বা মালিক যদি অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে চার্জ দেন তা আমরা জানতে পারলে তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কুড়িগ্রামে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা নেসকোর অধীনে ১১ থেকে ১৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচেছ ৬ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ মেগাওয়াট। ফলে প্রতিদিন প্রতি ফিডারে ৩ থেকে ৫বার লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।