ভিডিও সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি, খাদ্য কর্মকর্তা লাপাত্তা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি, খাদ্য কর্মকর্তা লাপাত্তা। প্রতীকী ছবি

পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : পলাশবাড়ি উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, যথাযথ নিয়ম-নীতি অনুসরণ না করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মমিনুর রশিদ সিদ্দিকী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীদের গোপনে নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকেই  তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করে গা ঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

সূত্র জানায়, ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ২১ জন ডিলার নিয়োগের জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ১২টি শর্তারোপ করে আবেদনপত্র জমাদানের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ২২ ফেব্ররুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৮৮টি আবেদনপত্র জমা পড়ে।

বিজ্ঞপ্তির ২ নম্বর শর্তে উল্লেখ করা হয় প্রত্যেক আবেদনকারীর কমপক্ষে ১৫ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংরক্ষণের সক্ষমতা ও একটি পাকা গুদামঘর থাকতে হবে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ আবেদনকারীর গুদামঘর এই শর্ত পূরণে অক্ষম ছিল।

নিয়ম অনুযায়ী, যেসব বিক্রয় কেন্দ্রে একাধিক আবেদন পড়ে, সেখানে লটারির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করার কথা থাকলেও তা অনুসরণ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মমিনুর রশিদ সিদ্দিকী রাতের আঁধারে তালিকা চূড়ান্ত করে ৯ জুলাই তাতে স্বাক্ষর করেন এবং ১৩ জুলাই তা প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন

চাঞ্চল্যকর তথ্য হচ্ছে এই তালিকা কমিটির সভাপতি ও একাধিক সদস্যকে না জানিয়েই অনুমোদন করা হয়েছে। ফলে এতে ভিন্ন নামে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন প্রভাবশালী মহলের আত্মীয়স্বজন, এমনকি ব্যবসায়ী নন এমন ব্যক্তিরাও। এতে করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

১৩ জুলাই তালিকা প্রকাশের পর বঞ্চিত আবেদনকারীরা উপজেলা খাদ্য অফিস ঘেরাও করে লটারির দাবিতে প্রতিবাদ জানান। ওইদিন সন্ধ্যায় খাদ্য কর্মকর্তা ১৪ জুলাই সকাল ১১টায় লটারি আয়োজনের একটি নোটিশ তৈরি করলেও, অজ্ঞাত কারণে তা স্বাক্ষর না করেই গা ঢাকা দেন।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে নিয়োগ বঞ্চিত অন্তত ১৫-১৬ জন আবেদনকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তারা লটারির মাধ্যমে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পুনরায় নিয়োগ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন অন্যথায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম জানান, মোট ৮৮টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ২২টি বৈধ বিবেচনায় নেয়া হয়। শুনেছি ২১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে মোট ২৯টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। 
খাদ্য কর্মকর্তা মমিনুর রশিদ সিদ্দিকী বলেন, প্রথম পর্যায়ে ২১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সমঝোতার ভিত্তিতে আরও ৮ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে, যা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।
নিয়োগ কমিটির সদস্য ও সমাজসেবা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, প্রকৃতপক্ষে এসব সিদ্ধান্ত সভাপতি ও সদস্য সচিবরাই নিয়ে থাকেন। অন্যান্য সদস্যদের মতামতের তেমন গুরুত্ব নেই।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়া নন্দীগ্রামে নিজ বাড়ি থেকে আ’লীগ নেতা গ্রেফতার

তিস্তা সেচ ক্যানেলে বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ৯০ একর আমন ক্ষেত পানির নিচে

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাবেক এপিপি এড. মিজান গ্রেফতার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাড়ছে নদীর পানি অতিবৃষ্টিতে আক্রান্ত ১৩শ বিঘা জমির ফসল

রংপুরে ২১টি যানবাহনের ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা

বগুড়া ফুলবাড়ীর শাকিল হত্যা মামলার আসামি রাজু ঢাকায় গ্রেফতার