সহজে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ভেরিফাইড করবেন যেভাবে

তথ্য প্রযুক্তি ডেস্কঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি যত বেশি বিশ্বাসযোগ্য, ততই আপনি দৃশ্যমান। এই বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার অন্যতম চিহ্ন হলো ‘ভেরিফাইড ব্যাজ’। ফেসবুকে নীল রঙের একটি টিক চিহ্ন যা জানিয়ে দেয়, এই প্রোফাইল বা পেজটি আসল। তবে ২০২৫ সালে এসে শুধু তারকা বা বড় ব্র্যান্ড নয়, সাধারণ মানুষ কিংবা ছোট উদ্যোক্তারাও চাইলে ফেসবুকে ভেরিফাইড ব্যাজ পেতে পারেন। এই লেখায় জানবেন কে ভেরিফিকেশনের জন্য যোগ্য, কীভাবে আবেদন করবেন এবং সফল হওয়ার উপায়।
ভেরিফিকেশন কী: ফেসবুক ভেরিফিকেশন একটি যাচাইকরণ প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে, একটি প্রোফাইল বা পেজ আসল এবং নির্ভরযোগ্য। ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টের পাশে থাকে একটি নীল রঙের চেক মার্ক। এই সুবিধা ফেসবুক চালু করে ২০১৩ সালে। বর্তমানে দুটি ধরনের ফেসবুক ভেরিফিকেশন রয়েছে:
- ফ্রি ভেরিফিকেশন: তারকা, পাবলিক ফিগার ও প্রতিষ্ঠানের জন্য।
- মেটা ভেরিফাইড বা পেইড ভেরিফিকেশন: মাসিক ফি দিয়ে কেউ চাইলে ভেরিফায়েড ব্যাজ পেতে পারেন।
কারা এই সুবিধা নিতে পারবেন
ট্র্যাডিশনাল ভেরিফিকেশন
- প্রকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হতে হবে
- একাধিক প্রোফাইল বা পেজ গ্রহণযোগ্য নয় (ভাষাভিত্তিক ব্যতিক্রম ছাড়া)
- প্রোফাইল/পেজে ছবি, বায়ো এবং সাম্প্রতিক পোস্ট থাকতে হবে
- পরিচিত এবং বহুল অনুসন্ধানযোগ্য হতে হবে
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা ব্যবসায়িক ডকুমেন্ট দিতে হবে
মেটা ভেরিফাইড বা পেইড ভেরিফিকেশন
- বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর
- সরকার স্বীকৃত ছবি-সংবলিত আইডি থাকতে হবে
- 2FA (টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন) চালু থাকতে হবে
- নাম ও প্রোফাইল ফ্রিকোয়েন্টলি পরিবর্তন করলে সমস্যা হতে পারে
ব্যবসায়িক পেজের জন্য অতিরিক্ত শর্ত
- মেটা বিজনেস সুইটের মাধ্যমে পেজ পরিচালনা
- প্রোফাইল ফটো, কভার ফটো এবং ক্যাটাগরি নির্ধারণ করতে হবে
কেন এই ব্যাজ জরুরি: প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বর্তমান সময়ে ফেসবুকের ভেরিফাইড ব্যাজের গুরুত্ব বলছেন। এই ব্যাজ দারুণ কাজে আসে। এগুলো হলো:
আরও পড়ুন- বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়: অনুসারীরা বুঝে নেন এটি অফিসিয়াল পেজ বা প্রোফাইল
- সার্চ রেজাল্টে অগ্রাধিকার: খোঁজার সময় ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট আগে দেখায়
- ইম্পারসোনেশন থেকে সুরক্ষা: কেউ যেন আপনার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলতে না পারে
- কম প্রশ্ন: গ্রাহকেরা নিশ্চিত থাকে, আলাদা করে যাচাই করতে হয় না
- তথ্য মিলিয়ে নেয়া সহজ: অন্যান্য ওয়েবসাইটেও তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে নেয়া যায়
যেভাবে আবেদন করবেন
১.ফ্রি ভেরিফিকেশনের জন্য
- ফ্রি ভেরিফিকেশন (Traditional) এই ফর্মে যান
- পেজ/প্রোফাইল নির্বাচন করুন
- সরকার অনুমোদিত এনআইডি আপলোড করুন
- নিজেকে ‘পরিচিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান’ প্রমাণে সংবাদ কভারেজ, ওয়েবসাইটের লিংক দিন
- আবেদন পাঠান এবং অপেক্ষা করুন
- আবেদন বাতিল হলে ৩০ দিন পর আবার চেষ্টা করতে পারবেন
২. মেটা ভেরিফাইড বা পেইড ভেরিফিকেশন
- পেইড ভেরিফিকেশন মেটা বিজনেস সুইট খুলুন
- ‘Become a Verified Business’ অপশনে ক্লিক করুন
- ফর্ম পূরণ করুন, প্রয়োজনীয় তথ্য দিন
- সাবস্ক্রিপশন বেছে নিন এবং পেমেন্ট দিন
- ভেরিফিকেশন নিশ্চিত হলে ব্যাজ যুক্ত হবে
যেভাবে ভেরিফায়েড হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াবেন
- নাম ও প্রোফাইল ছবি স্থির রাখুন: আবেদন করার সময় বড় কোনো পরিবর্তন না করাই ভালো
- পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল তৈরি করুন: বায়ো, ছবি, যোগাযোগের তথ্য ঠিকঠাক দিন
- নামকরণের নিয়ম অনুসরণ করুন: অপ্রাসঙ্গিক শব্দ (যেমন “official”, “real” ইত্যাদি) এড়িয়ে চলুন
- ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলুন: ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য, সহিংসতা বা ঘৃণার বক্তব্য থেকে দূরে থাকুন
ফেসবুকের ব্যাজ শুধু একটি আইকন নয় এটি আপনার ডিজিটাল পরিচয় ও বিশ্বাসযোগ্যতার প্রতীক। ব্যবসা-বাণিজ্য, গণমাধ্যম বা ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড যে ক্ষেত্রেই থাকুন না কেন, ফেসবুক ভেরিফিকেশন আপনাকে এক ধাপ এগিয়ে রাখবে। শর্তগুলো ভালোভাবে পড়ে দেখুন, প্রয়োজনীয় তথ্য প্রস্তুত রাখুন, তারপর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আবেদন করুন।
মন্তব্য করুন