শীতকালে যাদের ফুলকপি-বাঁধাকপি না খাওয়াই ভালো
শীত এলে বাজার ভরে যায় টাটকা ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে। এগুলো ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় সাধারণভাবে স্বাস্থ্যকর সবজি হিসেবেই ধরা হয়। তবে যে কোনো খাবারের মতোই এগুলোও সবার জন্য সমান উপযোগী নয়। কিছু শারীরিক অবস্থায় ফুলকপি বা বাঁধাকপি বেশি খেলে উল্টো হজমের সমস্যা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।
চলুন কারা ফুলকপি-বাঁধাকপি খাওয়া এড়িয়ে চলবেন জেনে নেওয়া যাক-
যাদের হজমের সমস্যা, গ্যাস বা ব্লোটিং হয়
ফুলকপি ও বাঁধাকপি ক্রুসিফেরাস সবজি দলে পড়ে। এই সবজিতে রাফিনোজ নামের এক ধরনের জটিল শর্করা এবং বেশি পরিমাণ ফাইবার থাকে। এগুলো হজম হতে সময় নেয় এবং অন্ত্রে গিয়ে গ্যাস তৈরির প্রবণতা বাড়ায়। যাদের স্বাভাবিকভাবেই গ্যাস, বুক জ্বালাপোড়া বা পেটফাঁপা হয়, তাদের ক্ষেত্রে এই সবজি বেশি খেলে পেটে অস্বস্তি, ব্যথা ও ফোলাভাব বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে আইবিএস-এ আক্রান্ত ব্যক্তিরা এই ধরনের সমস্যায় বেশি ভোগেন। তাই তাদের জন্য পরিমিতি বজায় রাখা জরুরি।
যাদের অ্যাসিডিটি আছে
যাদের হজম খুব সংবেদনশীল, যেমন গ্যাস্ট্রাইটিস বা অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য কাঁচা বা কম সেদ্ধ বাঁধাকপি ও ফুলকপি বেশি কঠিন হয়ে উঠতে পারে। অতিরিক্ত ফাইবার হজম না হয়ে অন্ত্রে জমে গ্যাস তৈরি করে এবং পেটে অস্বস্তি বা চাপের অনুভূতি সৃষ্টি করে। ফলে খাবারটি গ্রহণের পর অস্বাভাবিক ঢেকুর, বুক জ্বালা বা পেটে ভারীভাব দেখা দিতে পারে। রান্না করা হলেও যদি সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
থাইরয়েড রোগী
বাঁধাকপি ও ফুলকপিতে গয়ট্রোজেন নামের কিছু উপাদান থাকে, যা থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে।বিশেষ করে হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে। সাধারণত রান্না করার পর এই ঝুঁকি কমে যায়, তবে দীর্ঘদিন অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সমস্যা হতে পারে। যাদের থাইরয়েডের ওষুধ চলছে, তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের খাবার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াই উত্তম।
প্রতিদিন কতটুকু খাওয়া ভালো
অনেকেই শীতে নিয়ম করে প্রায় প্রতিদিনই ফুলকপি বা বাঁধাকপি খান। কিন্তু অতিরিক্ত ফাইবার ও রাফিনোজ নিয়মিত বেশি মাত্রায় শরীরে গেলে গ্যাস-ব্লোটিং, বদহজম ও অন্ত্রের অস্বস্তি বাড়তে পারে। তাই পুষ্টিবিদরা একাধিক সবজি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়ার এবং এগুলোকে সপ্তাহে কয়েক দিন, পরিমিত পরিমাণে রাখার পরামর্শ দেন। এতে যেমন পুষ্টির ভারসাম্য রক্ষা হয়, তেমনি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও কমে।
সূত্র: হেলথলাইন, ওয়েবএমডি
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/152223