রংপুরের তারাগঞ্জে অটোরাইস মিলে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

রংপুরের তারাগঞ্জে অটোরাইস মিলে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : রংপুরের তারাগঞ্জে ছাবেয়া অটোরাইস মিলে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সংঘবদ্ধ ডাকাতরা কর্মচারিদের বেঁধে টাকাসহ মালাপত্র নিয়ে গেছে। ডাকাতরা অটোরাইস মিল লুটের পাশাপাশি কর্মরত স্টাফদের হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। এসময় ডাকাতদের বাধা দিতে গিয়ে মিলের জিএম মোতাকেল বিল্লাকে (৫২) গুরুত দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের উপজেলার ইকরচালি ইউনিয়নের ওই মিলে ডাকাতির এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও হিমাগার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২২-২৫ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাত দল রাত ২টার দিকে অটোরাইস মিলের পিছনের দিকে বাঁশঝাঁড় থেকে বাঁশ কেটে মাই তৈরি করে মিলে প্রবেশ করে। এরপর কৌশলে তারা মিলের গার্ড খোকন মিয়া, অফিস সহকারী রায়হান ও মেশিন অপারেটর মুকুলকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে ফেলে। পরে তারা দ্বিতীয় তলার অফিস কক্ষে গিয়ে মিলের ম্যানেজার মোশেদুল আলম ডালিমকে গাছের ডাল দিয়ে মারপিট করে বেঁধে রাখে। এসময় রাইস মিলের জিএম মোতাকেল বিল্লা বাধা দিলে তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জখম করে। সবার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ৫ লাখ টাকা লুট করে সিন্দুক ভাঙার চেষ্টা করে। শহিদুল নামের একজন ৯৯৯-এ মোবাইলে ডাকাতির ঘটনায় সহায়তা চাইলে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ মিলে আসে। তার আগেই ডাকাতেরা ৫ লাখ টাকাসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালমাল লুট করে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক নিয়ে পালিয়ে যায়। 

বয়লার মিস্ত্রি স্বাধীন রহমান জানান, সংঘবদ্ধ ডাকাতেরা একযোগে কেউ আসেনি। তারা এমনভাবে ভিতরে এসেছে আমরা কেউ বুঝতে পারিনি তারা ডাকাত। অটোমিলে প্রায় ৫০ জন কর্মচারির মতো ছিলাম। যাদের তারা দেখা পেয়েছে তাদের শরীর চেক করে মোবাইল নিয়ে বেঁেধ রেখেছে। ডাকাতদের সবার হাতে দেশিয় অস্ত্র ছিল। 

মিলের ম্যানেজার মোশেদুল আলম ডালিম বলেন, রাত ৩টার দিকে দ্বিতীয় তলায় প্রায় ৫-৬ জন ডাকাত আমার রুমে ঢুকে চাকুর মুখে আমাকে বেঁধে ফেলে। এসময় পাশের রুমে থাকা জিএম মোতাকেল বিল্লা রুমে আরো ৩-৪ জন ডাকাত গিয়ে ধরে ফেলে। এসময় তিনি একটু কথা বলার ও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে চাকু দিয়ে জখম করা হয়। পরে পুলিশের গাড়ির শব্দ টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। তাদের পড়নে হাফ প্যান্ট ও সবার মুখ মানকি টুপি দিয়ে ঢাকা ছিল। যে কারণে তাদের চেহারা চেনা যায়নি।

ছাবেয়া অটো রাইস মিলের মালিক আনিছুর রহমান লিটন জানান, ডাকাতির ঘটনাটি রাত ৩টা ২০ মিনিটে আমাকে জানানো হয়েছে। শুনছি প্রায় ৫ লাখ টাকাসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল লুট করে ডাকাতেরা নিয়ে গেছে। মিলের জিএম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে মারধর করে আহত করেছে ডাকাতরা। 

তারাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ৮ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। মিলের ক্যাশ ভোল্ট ভাঙতে পারেনি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত চেষ্টা চলছে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/152204