গাজায় ৩৭টি ত্রাণ সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ করছে ইসরায়েল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে কাজ করা ৩৭টি ত্রাণ সংস্থার অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। নতুন নিবন্ধন নীতিমালার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এসব সংস্থার লাইসেন্স প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অনুমোদন স্থগিত হবে এবং সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। বন্ধ হতে যাওয়া সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত বেশ কয়েকটি মানবিক সংগঠনও রয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এসব সংস্থা তাদের কর্মীদের সম্পূর্ণ ও যাচাইযোগ্য ব্যক্তিগত তথ্য জমা দেয়নি। তাদের মতে, এই তথ্য না দিলে মানবিক সহায়তার কাঠামোর ভেতরে সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ ঠেকানো সম্ভব নয়।
এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন যুক্তরাজ্যসহ ১০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, নতুন নিয়মগুলো অতিরিক্ত কঠোর ও অগ্রহণযোগ্য। তাদের আশঙ্কা, ত্রাণ সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হলে গাজায় স্বাস্থ্যসেবাসহ জরুরি মানবিক সেবায় প্রবেশাধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় মানবিক পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তাই ইসরায়েল সরকারের উচিত মানবিক সংস্থাগুলোকে ধারাবাহিক ও নির্ভরযোগ্যভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া।
ইসরায়েলি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ ব্যাহত হবে না। তাদের দাবি, জাতিসংঘ, দ্বিপাক্ষিক অংশীদার ও অনুমোদিত অন্যান্য মানবিক চ্যানেলের মাধ্যমে সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকবে। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, যেসব সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করা হচ্ছে, তাদের একটি বড় অংশ বর্তমান যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় কোনও সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। অতীতে এসব সংস্থার সম্মিলিত অবদান মোট সহায়তার খুব সামান্য অংশ ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে কাজ করা জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত মানবিক ফোরাম আগেই সতর্ক করে জানিয়েছিল, এই নতুন নিবন্ধন ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকে গুরুতর ঝুঁকির মুখে ফেলবে। তাদের মতে, এই ব্যবস্থা অস্পষ্ট, ইচ্ছামতো প্রয়োগযোগ্য এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। ফলে অনেক মানবিক সংস্থা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থায় পড়তে বাধ্য হবে। বর্তমানে গাজায় অধিকাংশ মাঠ হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জরুরি আশ্রয়, পানি ও স্যানিটেশন সেবা, অপুষ্ট শিশুদের পুষ্টি কেন্দ্র এবং মাইন অপসারণ কার্যক্রম আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর মাধ্যমেই পরিচালিত বা সহায়তাপ্রাপ্ত বলে জানানো হয়েছে। সূত্র : বিবিসি
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/152193