বগুড়ার নন্দীগ্রামে তৃতীয় স্ত্রীর কাছ টাকা নিতে এসে ভুয়া সেনা সদস্য আটক

বগুড়ার নন্দীগ্রামে তৃতীয় স্ত্রীর কাছ টাকা নিতে এসে ভুয়া সেনা সদস্য আটক

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে সাগর (৩৫) নামে এক ভুয়া সেনা সদস্যকে আটক করেছে স্থানীয়রা। সে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাদরন্ড গ্রামের মৃত যোগেন্দ্র নাথের ছেলে। পরে তাকে নন্দীগ্রাম থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার কলেজ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। সাগর দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে বগুড়ার মাঝিরা ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাগর গত ফাল্গুন মাসে সেনা সদস্য পরিচয়ে নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার কলেজ পাড়ার সুখিল চন্দ্রের মেয়ে সঞ্চিতা রানীকে বিয়ে করেন। ক্যান্টনমেন্টে বিয়ের অনুমতি নেই এমন অজুহাতে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। মেয়ের পরিবারের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তিনি সেনা সদস্যের ভুয়া আইডি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্রও দেখান।

বিয়ের সময় সঞ্চিতার পরিবার নগদ সাড়ে আট লাখ টাকা ও ১১ ভরি স্বর্ণালংকার প্রদান করে। সম্প্রতি রাজশাহীতে জমি কেনার কথা বলে তিনি আবার এক লাখ টাকা দাবি করেন। এদিকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী পাপিয়া মহন্ত তৃতীয় বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে নন্দীগ্রামে এসে সঞ্চিতার পরিবারকে তার বিয়ের ছবি ও ভিডিও দেখান।

এরপর সঞ্চিতার বাবা সাগরকে টাকা নেওয়ার জন্য নন্দীগ্রামে আসতে বলে। পরে সে টাকা নেওয়ার জন্য সঞ্চিতার বাসায় এলে দ্বিতীয় স্ত্রী পাপিয়াকে দেখে স্থানীয়দের সামনে একাধিক বিয়ে ও ভুয়া সেনা সদস্য পরিচয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন।

সঞ্চিতার বাবা সুখিল চন্দ্র বলেন, সেনা সদস্য পরিচয়ে সে আমার মেয়েকে বিয়ে করে। বিয়ের অনুমতি পায়নি তাই গোপনে বিয়ে দেই। এরপর সে আমার মেয়েকে বগুড়া বাসা ভাড়া নিয়ে কিছুদিন ছিল তারপর আমার বাসায় রেখে যায়।

তার দ্বিতীয় স্ত্রী নওগাঁ সদরের পাপিয়া মহন্ত বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে সেনা সদস্য পরিচয়ে তাকে বিয়ে করে সাগর। এরপর সে বগুড়ার একটি বাসা ভাড়া নিয়ে আমাকে রাখে। আমার সন্দেহ হলে ক্যান্টনমেন্টে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সাগর নামে কোন সেনা সদস্য নেই। এরপর জানতে পারি, সে নন্দীগ্রামে আবার বিয়ে করেছে।

তার প্রথম স্ত্রী নওগাঁর নিয়ামতপুরের লক্ষ্মী রানী বলেন, আমি জানতাম না সে এভাবে প্রতারণা করে বেড়াচ্ছে। আমার বাবা জায়গা, টাকা ও স্বর্ণালংকার দিয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন। আমাদের দুইটি সন্তান রয়েছে। এখন আমি দিশেহারা।

আটক সাগর তার অপরাধ স্বীকার করে বলেন, আমি প্রথমে আমার এলাকার ছাত্ররা গ্রামে বিয়ে করি। সে রাজশাহীতে থাকে। পরে নওগাঁ সদরের পাপিয়া মহন্তকে বিয়ে করি। তার কিছুদিন পরে নন্দীগ্রামে বিয়ে করেছি। তিনি আরও বলেন, সেনা সদস্যের আইডি কাডা ও পোশাক ঢাকা থেকে জালিয়াতি করে বানিয়ে নিয়েছি। এসব টাকা নিয়ে আমি আমার গ্রামে বাড়ি বানিয়েছি।

নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, স্থানীয়দের সহায়তায় প্রতারককে আটক করে পুলিশ থানা নিয়ে আসে। পরে গতকাল শনিবার দুপুরে নন্দীগ্রাম থানা থেকে তাকে বগুড়া কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/151741