১৮০ কোটি ডলারের লটারি জিতলেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা

১৮০ কোটি ডলারের লটারি জিতলেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বড়দিনের আগেই যেন ভাগ্যের দরজা খুলে গেলো যুক্তরাষ্ট্রের এক বাসিন্দার। দেশটির আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের একটি গ্যাস স্টেশন থেকে কেনা একটি পাওয়ারবল টিকিটে তিনি ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১৮০ কোটিরও বেশি ডলারের বিশাল লটারি জিতেছেন। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তার নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ড্রতে ওই ব্যক্তি পাঁচটি সঠিক সংখ্যা ও পাওয়ারবল মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম লটারি জ্যাকপট জিতে নেন। এর মধ্য দিয়ে টানা তিন মাস ধরে পাওয়ারবলে শীর্ষ পুরস্কার না জেতার ধারারও অবসান ঘটে। এই ড্রতে বিজয়ী নম্বরগুলো ছিল ৪, ২৫, ৩১, ৫২ ও ৫৯। পাওয়ারবল নম্বর ছিল ১৯।

এই বিশাল জ্যাকপট ও এর পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে জানা গেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

জানা গেছে, জয়ী টিকিটটি বিক্রি হয় ক্যাবট শহরের একটি মারফি ইউএসএ গ্যাস স্টেশনে। ক্যাবট শহরটি লিটল রকের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি উপশহর, যেখানে জনসংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ওই গ্যাস স্টোরে ফোন করা হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তবে মারফি ইউএসএর মুখপাত্র আলেজান্দ্রা ব্যারন ইমেইলে জানান, ক্রিসমাস ইভে পাওয়ারবল টিকিট কেনার জন্য তাদের স্টোরগুলোতে ব্যাপক ভিড় ছিল।

এর আগে ‘২ ডলারের টিকিটে ১৮০ কোটি ডলারের পুরস্কার: যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম পাওয়ারবল জ্যাকপট’ শিরোনামে বিষয়টি আলোচনায় আসে।

মারফি ইউএসএ স্টোরে বড় জ্যাকপট জেতার এটি দ্বিতীয় ঘটনা। ব্যারন জানান, গত বছর টেক্সাসের সুগার ল্যান্ডে অবস্থিত একটি মারফি এক্সপ্রেস স্টোর থেকে ৮০০ মিলিয়ন বা ৮০ কোটি ডলারের মেগা মিলিয়নস লটারি টিকিট বিক্রি হয়েছিল, যা পরে জয়ী হয়।

ক্যাবট শহরের মেয়র কেন কিনকেইড বলেন, পুরো শহরজুড়ে সম্ভাব্য বিজয়ী কে হতে পারেন, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, এটা ফেসবুক, টুইটার- সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই এটাই জানতে চায়, বিজয়ী কে।

গ্যাস স্টেশনটি একটি প্রধান আন্তঃরাজ্য মহাসড়কের কাছাকাছি হওয়ায় বিজয়ী ব্যক্তি শহরের বাইরের কেউও হতে পারেন বলে ধারণা মেয়রের। তিনি আরও বলেন, অবশ্যই আমি আশা করি, তিনি ক্যাবটেরই একজন বাসিন্দা হবেন। সেটা হলে দারুণ হতো।

আরকানসাসে লটারি বিজয়ীদের পুরস্কার দাবি করার জন্য ১৮০ দিন বা প্রায় ছয় মাস সময় দেওয়া হয় বলে জানান আরকানসাস স্কলারশিপ লটারির মুখপাত্র কারেন রেইনোল্ডস।

আরকানসাস আইনে ৫ লাখ ডলারের বেশি পুরস্কারজয়ীরা চাইলে তিন বছর পর্যন্ত নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে পারেন। তবে বিজয়ী যদি কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হন বা তার নিকট আত্মীয় হন, সে ক্ষেত্রে পরিচয় গোপনের মেয়াদ মাত্র ছয় মাস।

আরকানসাসে লটারির অর্থের ওপর অঙ্গরাজ্য পর্যায়ের আয়কর প্রযোজ্য, যেখানে সর্বোচ্চ করহার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। যদি বিজয়ী ৮৩৪.৯ মিলিয়ন ডলারের এককালীন নগদ অর্থ গ্রহণ করেন, তবে তাকে রাজ্যকে ৩২ মিলিয়নের বেশি ডলার কর দিতে হবে। এছাড়া বকেয়া কর, অনাদায়ী শিশুভরণপোষণ কিংবা অন্য কোনো দেনা বা আইনি দাবি থাকলে তা আইন অনুযায়ী সমন্বয় করা হবে।

পাওয়ারবল কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বশেষ ২০১১ সালে ক্রিসমাস ইভে পাওয়ারবল জ্যাকপট জিতেছিলেন আরেকজন। এছাড়া বড়দিনে মোট চারবার জ্যাকপট জেতা হয়েছে- ১৯৯৬, ২০০২, ২০১০ ও সর্বশেষ ২০১৩ সালে।

পাওয়ারবলের জ্যাকপট জেতার সম্ভাবনা ২৯ কোটি ২২ লাখে ১। এত বড় জ্যাকপট তৈরি করতেই এই কঠিন সম্ভাবনার কাঠামো রাখা হয়েছে। কেউ জিততে না পারলে পুরস্কারের অর্থ জমতে জমতেই এই অঙ্কে পৌঁছায়।

লটারি কর্মকর্তারা জানান, ২০১৫ সালে ইচ্ছাকৃতভাবেই জয়ের সম্ভাবনা আরও কঠিন করা হয়, যাতে এমন বিশাল জ্যাকপট তৈরি হয়। তবে তারা এটাও উল্লেখ করেন, ছোট পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

পাওয়ারবল টিকিটের দাম ২ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫টি অঙ্গরাজ্য, ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া, পুয়ের্তো রিকো ও ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস থেকে এই লটারি কেনা যায়।

সূত্র: সিএনবিসি, এনডিটিভি

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/151733