পঞ্চগড়ে স্পেশাল ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

পঞ্চগড়ে স্পেশাল ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড় রেল স্টেশনের কাছে ঢাকাগামী একটি স্পেশাল ট্রেনে কাটা পড়ে আখিরুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের টেংগনমাড়ি এলাকায় পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনটিতে কাটা পড়েন তিনি।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ট্রেনটি ভাড়া করেন। মারা যাওয়া আখিরুলের বাড়ি ধাক্কামারা ইউনিয়নের শিপাইপাড়া এলাকায়। তিনি আবুল হোসেনের ছেলে এবং পেশায় ছিলেন মাইক্রোবাস চালক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, টেংগনমারি এলাকায় রেললাইন পার হওয়ার সময় আখিরুলের মাইক্রোবাসটি লাইনের ওপর আটকে যায়। এসময় তিনি গাড়ি থেকে নেমে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিতে যান। তিনি ধাক্কা দিয়ে মাইক্রোবাসটি রেললাইন থেকে সরাতে পারলেও নিজে সরতে পারেননি। এসময় পঞ্চগড় থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়া স্পেশাল ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সপরিবারে আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন আখিরুল।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের বহনের জন্য ট্রেনটি ভাড়া করা হয়েছিল। ট্রেনটি পঞ্চগড় স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

এ দুর্ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে রেললাইনে অবস্থান নিয়ে পিলার ফেলে রেলপথ অবরোধ করেন। ফলে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। রাত ৯টা ১০ মিনিটে পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও দুর্ঘটনা কবলিত স্থান থেকে পুনরায় পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। ঢাকা হতে পঞ্চগড়গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ও সান্তাহার থেকে পঞ্চগড়গামী দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকা পড়ে। পরে জেলা প্রশাসক কাজী সায়েমুজ্জামান ও পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে কোনো রেলক্রসিং বা গেটম্যান নেই। ফলে ট্রেন চলাচলের সময় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ বা সতর্ক করার কেউ থাকে না। এই অব্যবস্থাপনাই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার জাহিদুর ইসলাম জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে পঞ্চগড় স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে একটি স্পেশাল ট্রেন ছেড়ে যায়। স্টেশন ছাড়ার কিছু সময় পরেই টেংগনবাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাত ৯টা ১০ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়া হলে কিছু দূর গিয়েই বিক্ষুব্ধ জনতার বাধার মুখে পড়ে। ট্রেনটি স্টেশনে ফিরিয়ে আনা হয়।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, আমি লোকজনকে বুঝিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে রেললাইন থেকে অবরোধ অপসারণ করি। আমি দাঁড়িয়ে থেকে উভয় দিকে আটকে পড়া ট্রেন পার করে দেই। এখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/151418