কমলা চাষে সফল বড়াইগ্রামের আব্দুল রউফ লোকসান টপকে আয় করলেন ৬ লাখ টাকা

কমলা চাষে সফল বড়াইগ্রামের আব্দুল রউফ লোকসান টপকে আয় করলেন ৬ লাখ টাকা

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় কমলা চাষে সফল হয়েছেন আব্দুর রউফ। তিনি গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিন বিঘা জমিতে লেবু জাতীয় ফসল চায়না জাতের কমলা লেবু ও ভিয়েতনামী মাল্টা চাষ করে বছরে আয় করেছেন ১০ লাখ টাকা। পেয়ারা চাষে ইতোপূর্বেতার লোকসান হয় ৮লাখ টাকা। তারপরেও হতাশ হননি তিনি। পরে মাল্টা ও কমলা লেবু চাষে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কমলার বাগানই তাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করেছে, বদলে দিয়েছে তার পরিবার পরিজনের জীবনযাত্রা। ৩ বিঘা জমিতে চায়না জাতের কমলা চাষে বছরে আয় হয় ১০ লাখ টাকা ও ব্যয় হয় ৪ লাখ টাকা। তার লাভ হয় ৬ লাখ টাকা। 

আব্দুল রউফ জানান, কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে ও সার্বিক সহযোগিতায় ২০২০ সালের অক্টোবরে এক ফুট উচ্চতার ১২০ টি কমলার ও ২০ টি ভিয়েতনামী মাল্টা চারা রোপণ করেন তিনি। শুরুর দিনগুলো ছিল নিরলস প্রচেষ্টার। তবুও তার স্বপ্ন ছিল নিজ হাতে তৈরি করা বাগান একদিন ভরে উঠবে সবুজ হলুদ কমলায়। সার প্রয়োগ, সেচ, পোকামাকড় দমন সব কিছুই কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়ম মেনে করতে হয়েছে। প্রতিটি গাছের যত্ন ছিল সন্তানের মতো। কৃষি দপ্তর থেকে তাকে বিনামূল্যে চারাগাছ, সার, বিষ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরো জানান, ২০২০ সালের আগে পেয়ারা চাষে৮ লাখ টাকা লোকসান হয় ওই স্থানেই পেয়ারা বাগানে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা ও সম্ভাবনা দেখে পেয়ারা চাষ শুরু করেছিলেন আব্দুল রউফ। কিন্তু রোগবালাই, খারাপ আবহাওয়া, বাজারদরের ওঠা-নামায় সব মিলিয়ে তার লোকসান হয় প্রায় ৮ লাখ টাকা। তার পরিবারকে কঠিন সংকটে ফেলে। লোকসানের পর তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে কমলা চাষ শুরু করেন। এই পরামর্শ তার জীবনে মোড় ঘুরিয়ে দেয়। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: সজীব আল মারুফ জানান, কৃষি দপ্তরের কর্তৃক বীজ-চারা সরবরাহ ও পরামর্শক্রমে আব্দুল রউফ কমলার বাগান তৈরি করেন। তার বাগানে ফলন ভাল হয়েছে। এ উপজেলায় কমলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে, তা আব্দুল রউফ প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে আরও অনেক কৃষক উপকৃত হবেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উচ্চমূল্যের বিকল্প ফল কমলা চাষ আগামী দিনের কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পরিশ্রম, ইচ্ছাশক্তি, সরকারি সহায়তা এবং কৃষিবিদদের পরামর্শ মিলেই বদলে যায় ভাগ্য।

 

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/151377