এনরিকে ‘আজীবন’ রাখতে চায় পিএসজি
স্পোর্টস ডেস্ক : গত মৌসুমে এনরিকের অধীনে পিএসজি তাদের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে। এটি এমন এক শিরোপা, যা গত এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্লাবটির ওপর ভর করে থাকা হতাশা দূর করেছে। এই সাফল্য ইউরোপে তাদের ভাবমূর্তি পাল্টে দিয়েছে। এনরিকে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন পিএসজি’র নতুন যুগের স্থপতি হিসেবে।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪৩ ম্যাচে এনরিকের অধীনে পিএসজির রেকর্ড-৯৮ জয়, ২৬ ড্র ও মাত্র ১৯ হার, জয়ের হার ৬৮.৫৩ শতাংশ। এই ধারাবাহিকতাই এনে দিয়েছে একের পর এক ট্রফি। সবশেষ চেলসি সাবেক ডিফেন্ডার ফিলিপে লুইসের কোচিংয়ে থাকা ফ্লামেঙ্গোকে হারিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জিতেছে তারা। চলতি বছরে একমাত্র দাগটি পড়ে গত জুলাইয়ে, যখন ক্লাব বিশ্বকাপে এনজো মারেস্কার চেলসি পিএসজিকে ফাইনালে হারের তিক্ত স্বাদ উপহার দেয়। তবে এই ব্যর্থতা এনরিকের শ্রেষ্ঠত্বে বড় দাগ ফেলতে পারেনি। এনরিকের সঙ্গে বর্তমান চুক্তি ২০২৭ সালে শেষ হলেও পিএসজি আগেভাগেই তার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইছে।
দিয়ারিও এএস’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্লাবটি এনরিকের সঙ্গে একটি তথাকথিত ‘আজীবন চুক্তি’ করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। ইউরোপীয় এলিট ফুটবলে এমন চুক্তির কথা আগে কখনো শোনা যায়নি। ক্লাবের শীর্ষ কর্তারা এনরিকের কাজ নিয়ে ভীষণ সন্তুষ্ট এবং তাকে পিএসজির দীর্ঘমেয়াদি ক্রীড়া দর্শনের অভিভাবক হিসেবে দেখতে চান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পিএসজিতে লুইস এনরিক এমন এক পরিবেশ পেয়েছেন যা তার ফুটবল দর্শনের সঙ্গে পুরোপুরি মানানসই। ক্লাব কর্তৃপক্ষের পূর্ণ সমর্থনে তিনি কঠোর পরিশ্রম ও দলগত দায়িত্ববোধের ওপর আপসহীন বিশ্বাস গড়ে তুলেছেন, যে মূল্যবোধগুলো তারকাখচিত ড্রেসিংরুমে সবসময় জনপ্রিয় ছিল না। কিলিয়ান এমবাপ্পের রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাওয়া ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। একক সুপারস্টারের ছায়া থেকে মুক্ত হয়ে এনরিক এমন এক ভারসাম্য খুঁজে পান, যা ২০২৪-২৫ মৌসুমের আগে পিএসজি’র নাগালের বাইরে ছিল। এরপরের ফলাফল ছিল চোখে পড়ার মতো।
২০২৫ সালে ক্লাবের সাফল্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এনরিকে বলেন, ‘এটা ক্লাবের জন্য ঐতিহাসিক। সাধারণত মৌসুম শেষে মূল্যায়ন হয়, যেহেতু আমরা এখন ২০২৫-২৬ মৌসুমে আছি। এখনই পুরো রিভিউয়ের সময় নয়। তবে যদি শুধু ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার বছরের কথা ভাবি, তাহলে এটা স্পষ্ট যে প্যারিসবাসী ও ক্লাব-উভয়ের জন্যই বছরটি ঐতিহাসিক। আমরা খুশি। একই সঙ্গে বড়দিনের ছুটির জন্যও খুশি। এই বিশ্রাম আমাদের দরকার। ছুটির পর আমরা আবার ফিরব এবং মৌসুমের বাকি অংশ নিয়ে ভাবব।’
এনরিকের কর্তৃত্ব এখন প্রশ্নাতীত। নাম-খ্যাতি নির্বিশেষে যেকোনো খেলোয়াড়কে বেঞ্চে বসাতে তিনি দ্বিধা করেন না-দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয়, এই নীতি এখন প্রতিষ্ঠিত। কেউ কেউ এই চ্যালেঞ্জে আরও উজ্জ্বল হয়েছেন। একসময় ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকা উসমান দেম্বেলে এই স্প্যানিশ কোচের অধীনে দুর্দান্ত পারফর্ম করে জিতেছেন ব্যালন ডি’অর ও দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার পুরস্কার। আবার কেউ কেউ কঠিন শিক্ষা পেয়েছেন। ব্র্যাডলি বারকোলা ও খভিচা কাভারাতস্কেলিয়া এখন বুঝেছেন-অর্ধেক মনোযোগ মানেই বেঞ্চ।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/151315