ইউক্রেনের কৌশলগত শহর সিভারস্ক দখলে নিলো রুশ বাহিনী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় রণক্ষেত্রে তীব্র লড়াইয়ের পর কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিভারস্ক শহর থেকে পিছু হটেছে ইউক্রেনীয় সেনারা। রাশিয়ার ক্রমাগত অগ্রযাত্রার মুখে নিজেদের সেনাদের জীবন বাঁচাতে কিয়েভ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সেনাদের জীবন রক্ষা এবং ইউনিটের যুদ্ধের সক্ষমতা বজায় রাখতে’ তারা সিভারস্ক থেকে সরে এসেছে। তাদের মতে, রুশ বাহিনীর বিশাল জনবল এই যুদ্ধে বড় সুবিধা দিচ্ছে। সিভারস্ক দখলের ফলে রাশিয়া এখন ডনেস্ক অঞ্চলের ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেষ দুই দুর্গ স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্কের আরও কাছাকাছি চলে এলো।
রাশিয়া বর্তমানে ডনেস্ক অঞ্চলের ৭৫ শতাংশ এবং পাশের লুহানস্ক অঞ্চলের ৯৯ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। এই দুটি অঞ্চল সম্মিলিতভাবে ডনবাস নামে পরিচিত। সিভারস্কের পতনের দিনেই ইউক্রেনজুড়ে ৬৩৫টি ড্রোন ও ৩৮টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, তারা এর মধ্যে ৬২১টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এই হামলায় এক শিশুসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
ভয়াবহ হামলার পর ইউক্রেনের জ্বালানি পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৭ ডিগ্রিতে নেমে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দেশটির জ্বালানি অপারেটররা সব অঞ্চলে জরুরি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সতর্কতা জারি করেছে। জাপোরিজ্জিয়া শহরে দিনে মাত্র ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে। অনেক এলাকায় কয়েকদিন বিদ্যুৎ না থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, মস্কোয় এক গাড়ি বোমা হামলায় রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ জেনারেল ফানিল সারভারভ নিহত হয়েছেন। তিনি রাশিয়ার অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন। এই হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে মস্কো, তবে কিয়েভ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইউক্রেন রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় স্টাভরোপলের একটি পেট্রোকেমিক্যাল কারখানায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
চলমান যুদ্ধ বন্ধে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় আলোচনা চললেও কোনও সুরাহা হয়নি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বড়দিন উপলক্ষে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া তা প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে ডনবাস অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে জেলেনস্কি কোনও ভূখণ্ড ছাড়তে নারাজ এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দাবি করছেন। খবর : বিবিসি
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/151306