৮৭৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চার শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা

৮৭৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চার শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছরের ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৪১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১১১২ জন আহত হয়েছেন। 

সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসে জানিয়েছে, এ সময়কালে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মোট ৮৭৫টি লঙ্ঘনের ঘটনা তারা নথিভুক্ত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এসব লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলিবর্ষণের ২৬৫টি ঘটনা, আবাসিক এলাকায় ৪৯টি সামরিক অনুপ্রবেশ, ৪২১টি গোলাবর্ষণ এবং ১৫০টি বাড়িঘর ধ্বংসের ঘটনা।

গাজার মিডিয়া অফিস আরও অভিযোগ করেছে, যুদ্ধবিরতির আওতায় ইসরাইলের মানবিক দায়বদ্ধতাও পূরণ করা হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী যেখানে ৪২,৮০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করার কথা ছিল, সেখানে এখন পর্যন্ত ঢুকেছে মাত্র ১৭,৮১৯টি। এতে দৈনিক গড়ে ২৪৪টি ট্রাক প্রবেশ করেছে, যা নির্ধারিত দৈনিক ৬০০ ট্রাকের তুলনায় অনেক কম। এর ফলে চুক্তি বাস্তবায়নের হার মাত্র ৪১ শতাংশ বলে দাবি করা হয়েছে। জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। যুদ্ধবিরতির আওতায় যেখানে ৩,৬৫০টি জ্বালানি বহনকারী ট্রাক ঢোকার কথা ছিল, সেখানে অনুমতি পেয়েছে মাত্র ৩৯৪টি। অর্থাৎ দৈনিক গড়ে মাত্র পাঁচটি ট্রাক প্রবেশ করেছে, যেখানে চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ৫০টি ট্রাক আসার কথা ছিল। এতে জ্বালানি সরবরাহের মাত্র ১০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

মিডিয়া অফিস সতর্ক করে বলেছে, এই সংকটের ফলে হাসপাতাল, বেকারি, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাগুলো প্রায় সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ মারাত্মকভাবে বেড়েছে। বিবৃতিতে, ‘গাজায় গভীর ও নজিরবিহীন মানবিক সংকট’ এর কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ইসরাইল সীমান্ত ক্রসিং খুলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং তাঁবু, অস্থায়ী ঘর, ক্যারাভানসহ আশ্রয় সামগ্রী প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। এসব পদক্ষেপকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সাম্প্রতিক শীতকালীন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৬টি ভবন ধসে পড়ার পেছনেও ইসরাইলের ইচ্ছামতো নীতিকে দায়ী করেছে গাজার মিডিয়া অফিস। এসব ঘটনায় অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। সংস্থাটি মধ্যস্থতাকারী দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন অবিলম্বে নিরাপদভাবে ত্রাণ ও জ্বালানি প্রবাহ নিশ্চিত করা হয় এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী আশ্রয় সামগ্রী গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তাদের মতে, এসব পদক্ষেপ ছাড়া গাজায় ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে ওঠা মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/151166