ইরানকে পুনরায় পরমাণু কর্মসূচি শুরু করতে দেওয়া যাবে না: মোসাদ
ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়া বলেছেন, ইরান যেন তার পরমাণু কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা ইসরাইলের দায়িত্ব। মঙ্গলবার জেরুজালেমে মোসাদ এজেন্টদের সম্মানে আয়োজিত এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।১২ দিনের যুদ্ধে তেহরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরাইলি হামলার ছয় মাস পর বারনিয়া বলেন, “পরমাণু বোমা তৈরির চিন্তা এখনও তাদের হৃদয়ে বিদ্যমান। যে পরমাণু প্রকল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা আর কখনো সক্রিয় না হয়—আমেরিকানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায়—এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের।”
২০২৬ সালের জুনে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া বিদায়ী এই গোয়েন্দা প্রধান ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শুরুতে ইসরাইলের আকস্মিক হামলার প্রশংসা করেন। তার মতে, এসব হামলার মাধ্যমে ইরানের ভেতরে ইসরাইলি গোয়েন্দাদের বিপুল তথ্যসংগ্রহের সক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে।
বারনিয়া বলেন, “এক মুহূর্তেই আয়াতুল্লাহদের শাসন বুঝে গেছে যে ইরান পুরোপুরি উন্মুক্ত এবং গভীরভাবে অনুপ্রবেশ করা হয়েছে।”
তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, “ইরান মনে করে, তারা আবারও বিশ্বকে প্রতারণা করতে পারবে এবং আরেকটি খারাপ পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়ন করবে। আমরা কোনো খারাপ চুক্তি বাস্তবায়িত হতে দিইনি এবং দেব না।”
পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করে আসছে এবং তা ঠেকাতে চেষ্টা করছে। তবে তেহরান বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। ওই চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করার কথা ছিল। ইসরাইল শুরু থেকেই এই চুক্তির বিরোধিতা করে আসছে।
এ বছরের এপ্রিল মাসে ওমানের মধ্যস্থতায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র নতুন একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করলেও, ১৩ জুন ইরানে ইসরাইলের আকস্মিক হামলার পর সেই আলোচনা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ওই হামলাই ১২ দিনের সংঘাতের সূচনা করে, যেখানে পরে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলায় অংশ নেয়।
ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত মাত্রা এখনও স্পষ্ট নয়। পেন্টাগনের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে গেছে, যা মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রাথমিক গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ক্ষতি মাত্র কয়েক মাসের।
এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ট্রাম্পের এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংসের কথা বলা “স্বপ্ন দেখার শামিল।”
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/150353