টিউলিপসহ দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক

টিউলিপসহ দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক

কোনো টাকা পরিশোধ না করেই রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের নির্মিত ভবনে ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে সাবেক বৃটিশ মন্ত্রী টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল করা মামলার অভিযোগপত্র আজ বৃহস্পতিবার দুদক অনুমোদন দিয়েছে। 

দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর শিগগির অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেবেন। দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ওই তথ্য জানান। 

অভিযোগপত্রের অন্য আসামি হলেন, রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা সরদার মোশাররফ হোসেন। মারা যাওয়ায় অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মালিক জহুরুল ইসলাম ও রাজউকের সাবেক আইন উপদেষ্টা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী প্রয়াত ড. মোহাম্মদ সেলিমের নাম। 

জানা গেছে, দুদকের তদন্তে অর্থ পরিশোধ না করেই গুলশান-২ এর ৭১ নম্বর রোডের ১১এ, ১১বি ফ্ল্যাটটি নেওয়া হয়।

দুদকের তদন্ত থেকে জানা গেছে, ওই ভবনের প্লটটির মূল মালিক রাজউক। প্লটটি দীর্ঘমেয়াদি লিজের আওতায় ছিল। 

প্লটটি হস্তান্তরযোগ্য ছিলো না তা জানা সত্ত্বেও টিউলিপ সিদ্দিক রাজউক কর্মকর্তাকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে ইস্টার্ন হাউজিংকে আমমোক্তার অনুমোদন করে প্লটটিতে ফ্ল্যাট নির্মাণ করে বিক্রির অনুমোদন করিয়ে নেন।   

অবৈধ সুবিধা দেওয়া ও নেওয়ার মাধ্যমে যড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ফ্ল্যাট নম্বর বি/২০১, বাড়ি নং ৫এ ও ৫বি (পুরাতন), বর্তমানে- ১১এ, ১১বি (নতুন), রোড নং ৭১, গুলশান, ঢাকা-১২১২ বিনামূল্যে গ্রহণে সহযোগিতা করায় টিউলিপসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।  

জানা গেছে, এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি শাহ খসরুজ্জামান মামলাটি কোয়াশমেন্টের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে ক্রিমিনাল মিস কেস দায়ের করেন। হাইকোর্ট বিভাগ মামলাটির শুনানি শেষে আসামি শাহ খসরুজ্জামানের ক্ষেত্রে তিন মাসের স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল ইস্যু করেন। ওই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে কমিশন  আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে ক্রিমিনাল পিটিশন করলে চেম্বার জজ আদালত নো অর্ডার রায় দেন। তাতে এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি শাহ খসরুজ্জামানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা মিস কেসটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের সুযোগ না থাকায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

টিউলিপ সিদ্দিক ২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরের আয়কর নথি খুলেছেন এবং ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। ২০১৮-২০১৯ করবর্ষের পরে তিনি আর আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি। ২০০৬-২০০৭ করবর্ষ থেকে ২০১৪-২০১৫ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয়কর রিটার্ন অ্যাডভান্স টুওয়ার্ডস ডেভেলপারস হিসেবে ৫ লাখ টাকা প্রদর্শিত আছে। তিনি ফ্ল্যাটটির মালিক হয়ে ভোগদখলে থাকলেও  ২০১৫-২০১৬ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয়কর নথিতে ফ্ল্যাটটি প্রদর্শন করেননি। ডেভেলপার কোম্পানিকে অগ্রীম বাবদ ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে মিথ্যা তথ্য আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেছেন। 

তিনি ২০১৫-২০১৬ করবর্ষে ফ্ল্যাটটি তার ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিককে হেবা করা হয়েছে বলে দেখিয়েছেন। আয়কর নথিতে দাখিলকৃত ডিড অব হেবা রেজিস্ট্রেশনের ফটোকপি পর্যালোচনায় দেখা যায়, দলিলটি নোটারি পাবলিক প্রত্যায়িত। কিন্তু তদন্তে তা জাল প্রমাণিত হয়েছে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/149794