শীতে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকি: হার্ট ভালো রাখতে যা খাবেন
লাইফষ্টাইল ডেস্ক : শীতকাল তার নিজস্ব সৌন্দর্য নিয়ে আসে—ঝলমলে সকাল, নরম রোদ, উষ্ণ পানীয় আর আরামদায়ক খাবার। তবে যারা তীব্র শীতের পরিবেশে বসবাস করেন, তাদের জন্য এই ঋতু কখনও কখনও চ্যালেঞ্জও হয়ে দাঁড়ায়, বিশেষ করে হৃদযন্ত্রের জন্য। এ সময় সর্দি-কাশি ও জ্বর বাড়লেও সবচেয়ে বড় উদ্বেগ দেখা দেয় হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের হার বৃদ্ধি নিয়ে। সুখবর হলো—কিছু সহজ, সচেতন অভ্যাস হৃদযন্ত্রকে রাখতে পারে একদম নিরাপদ।
কেন শীতে বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি?
তাপমাত্রা কমে গেলে শরীরের প্রথম কাজ হলো উষ্ণতা ধরে রাখা। ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়, ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হৃদয়ে অক্সিজেন–রক্তপ্রবাহ কমে আসে। এর ফলে হৃদযন্ত্রকে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
এ ছাড়া—
শীতে রক্ত ঘন হয়ে যায়,
কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে,
রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এসব মিলেই শীতে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
শীতে হৃদযন্ত্র-বান্ধব খাবার
শীতের সময় পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস আরও জরুরি হয়ে ওঠে। শাকসবজি, ফল, গোটা শস্য, লীন প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার হৃদযন্ত্রকে মজবুত রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ভালো ফ্যাট বাছাই করুন
চিনাবাদাম, সূর্যমুখী ও সরিষার তেল—এগুলোতে থাকে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা LDL (ক্ষতিকর) কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
স্যামন, সার্ডিনের মতো ফ্যাটি মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমায় এবং হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখে।
নিরামিষাশীদের জন্য আখরোট, চিয়া সিড, তিসি বীজ চমৎকার ওমেগা-৩ উৎস।
বাদামের শক্তি
বাদাম, আখরোট, কাজু আর চিনাবাদামে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন ও ভিটামিন-ই। এতে থাকা আর্জিনিন রক্তনালীকে শিথিল করে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।
প্রতিদিন মাত্র এক মুঠো বাদামই যথেষ্ট।
আস্ত শস্যকে গুরুত্ব দিন
সাদা ভাত বা ময়দা-ভিত্তিক খাবারের বদলে খান—
বাদামি চাল
ওটস
বার্লি
বাজরা
আস্ত গম
কুইনোয়া
আস্ত শস্য ফাইবারসমৃদ্ধ, কোলেস্টেরল কমায়, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।
রঙিন ফল ও সবজি খান
টমেটো, বেরি, আঙুর, মূলা, বেল মরিচ—এসব রঙিন খাবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এগুলো রক্তনালীকে শক্তিশালী করে এবং শরীরের প্রদাহ কমায়।
প্রতিদিন প্লেটের অর্ধেক অংশ শাকসবজি এবং ২–৩ বার ফল রাখার লক্ষ্য রাখুন।
নিয়মিত খাবারের সময় বজায় রাখুন
সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে খাবার গ্রহণের চেষ্টা করুন।
পুষ্টিকর নাশতায় দিন শুরু করুন।
দীর্ঘ সময় খাবার না খেয়ে বিরতি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন—এটি বিপাকক্রিয়া ধীর করে দেয়।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/149445