বগুড়ার নন্দীগ্রামে লেপ-তোষকের চাহিদা বেড়েছে, বাড়েনি কারিগরদের মজুরি
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : শীতের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে সারাদেশে। তাই শীতের আগমনে চাহিদা বেড়েছে লেপ-তোষকের। এর ফলে বগুড়ার নন্দীগ্রামের লেপ-তোষকের দোকান ও কারখানাগুলোতে ভিড় বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষকের কারিগররা। তবে আগের তুলনায় বাড়েনি কারিগরদের মজুরি।
শীত নিবারণে লেপ-তোষকের বিকল্প নেই। লেপ-তোষক না থাকলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই শীতের শুরুতেই মানুষ পছন্দসই লেপ-তোষক তৈরি করতে ভিড় করছেন বেডিং দোকানগুলোতে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের শীত বস্ত্র থাকলেও লেপের তুলনা নেই। লেপ ব্যবহারে আগ্রহ রয়েছে সবার মধ্যেই।
তাই শীতের শুরুতেই লেপ-তোষক তৈরির জন্য ভিড় বেড়েছে। নন্দীগ্রাম পৌর শহরে পাঁচটি লেপ-তোষকের কারখানা ও দোকান রয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত কাজ চলছে প্রতিটি কারখানা ও দোকানে। প্রতিদিন একটি কারখানায় আট থেকে ১০টি লেপ তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান কারিগররা। পৌর শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকার সাগর বেডিং হাউজের মালিক রাজু সরকার জানান, লেপ ও তোষকে বিভিন্ন ধরনের তুলা ব্যবহার করা হয়।
প্রকার ভেদে এর দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। লেপের জন্য যেসব তুলা ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে কার্পাস তুলার কেজি ১৬০-১৮০ টাকা, ফোম তুলা ১৩০ টাকা, ফাইবার তুলা ১৬০-১৮০ টাকা, শিমুল তুলা ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি এবং তোষকের জন্য ব্লেজার (গার্মেন্টস) তুলা ৪০ ও উল ৩৫ টাকা।
লেপ তৈরীর কাপড় গজপ্রতি ৬০-৭০ টাকা আর তোষকের কাপড় ৫০ টাকা। রাজু সরকার আরও জানান, আমাদের এলাকায় শীতের আগমনে শুরু হয়েছে। তাই অনেকেই তাদের পছন্দের লেপ-তোষক তৈরি ও ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। এবার ১৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকা মধ্য ভালো লেপ তৈরি করে বিক্রি করছি। চাহিদা বেশী থাকার কারণে আমার তিনজন শ্রমিকের সঙ্গে নিজেকেও কাজে সাহায্য করতে হচ্ছে।
লেপ তৈরি করতে আসা দলগাছা গ্রামের আলিমুল ইসলাম জানান, শীত নিবারণের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এবং শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে নতুন লেপ তৈরি করে নিচ্ছি। এবার তুলার দাম, কাপড়ের দাম, মজুরির দাম সবই বেশি। পৌর এলাকার আলাউদ্দিন বলেন, ভালো তুলার দাম বেড়েছে। গত বছর শিমুল তুলার কেজি ছিল ৩৫০ টাকা এবার চাচ্ছে ৪৫০ টাকা।
তাই পুরাতন লেপটাই মেরামত করে নিচ্ছি। লেপ তোষক তৈরির কারিগর রায়হান ও রানা আহমেদ জানান, কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘ শীতের এই চার মাস আমরা সবচেয়ে বেশী ব্যস্ত থাকি। আর এই চার মাসের আয় দিয়েই আমাদের চলতে হয় পুরো বছর।
একটি লেপ তৈরিতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি লেপ বানাতে পারি। দিনে আমরা ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকি, যা অন্য মাসে হয় না। তারা আরও বলেন, সব কিছুর দাম বেড়েছে কিন্তু আমাদের মজুরী একটুও বাড়েনি। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় কষ্ট।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/149295