একটি সোয়েটার এবং মা’কে নিয়ে বিপাশার কথা

একটি সোয়েটার এবং মা’কে নিয়ে বিপাশার কথা

 অভি মঈনুদ্দীন ঃ বিপাশা হায়াত, বাংলাদেশের একজন নন্দিত নাট্যাভিনেত্রী। তার অভিনীত নাটক এদেশের কোটি কোটি দর্শককে মুগ্ধ করেছে। আবার তার অভিনীত বেশ কয়েকটি সিনেমাও দর্শক নন্দিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই অভিনয়ে নিয়মিত নেই। এই সময়ে এসে বেশিরভাগ সময়ই কাটছে সুদূর আমেরিকাতে।

এরইমধ্যে বিপাশা হায়াতের স্বামী জনপ্রিয় অভিনেতা, নির্মাতা তৌকীর আহমেদ বেশকিছুদিন দেশে ছিলেন। তিনি বিটিভির জন্য ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করেছেন, ‘সোলজার’ সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। হাতের কাজ শেষে এরইমধ্যে তিনি আমেরিকা পৌঁছেছেন। যাবার সময়ে বিপাশার জন্য বিপাশারই মায়ের হাতে বানানো একটি সোয়েটার নিয়ে গেছেন। আর মায়ের হাতে বানানো সেই সোয়েটারটি হাতে পেয়ে বিপাশা হায়াত তার মা এবং সোয়েটারকে নিয়ে এক আবেগঘন স্ট্যটাস দিয়েছেন ফেসবুকে। পাঠকের জন্য সেই ফেসবুক স্ট্যটাসটিই তুলে ধরা হলো।

বিপাশা হায়াত লিখেছেন,‘ কজন নিখুঁত মস্তিষ্কসম্পন্ন মানুষ এবং নিখুঁত জীবনযাপনকারী মানুষের কথা বলছি। যিনি আমার জন্মদানকারী মানুষ। একজন সুন্দরের প‍‍ূজারী, একজন সাধক যিনি পৃথিবীর সকল কিছুর ভেতরে, সকল কর্মের ভেতরে, সকল বস্তুর অভ্যন্তরে কেবলই সুন্দর এবং শুদ্ধতার সন্ধান করেন। তাঁর চারপাশের সকল মানুষকে তিনি আজীবন কেবল শিল্পকলার আলোর পথে চলার সাহস যুগিয়েছেন এবং যুগিয়ে চলেছেন। এমন এক প্রাণ তিনি- নিজের জীবনকে অর্থপূর্ণ করেছেন অন্যকে আলোকিত করে। নিজেকে উৎসর্গ করেই তাঁর জীবনের অর্থ খুঁজে ফেরেন। আমরা তাঁকে কতটাই বা চিনতে পেরেছি! আমার মা। কিছুদিন আগে একটি সোয়েটার বুনে দেবার দাবি করেছিলাম। আম্মা বলল, আমি মরে যাব বলে স্মৃতি রাখবে? আমি বললাম, আমিও তো আগে মরতে পারি। তোমার শিল্প আমার ছোঁয়ায় রাখতে চাই। আম্মা বলল- বাজারে কত সোয়েটার, আমারটি কি সেরকম হবে? আমি বললাম - আমি শুধু মানুষের হাতে বানানো সোয়েটার চাইনা- চাই সেই মানুষটির হাতে তৈরী- যার কারনেই এই পৃথিবীতে আমার অস্তিত্ব এবং সকল কর্মকান্ড। যার কারণেই আমার যা কিছু ভাল। যা কিছু খারাপ তার দায় কেবলই আমার। আজ তৌকীর এই সোয়েটারটি সাত সমুদ্র পার হতে নিয়ে এলো। বহু নাটকীয় ঘটনার পর এর সৃষ্টি এবং আগমন। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আমাদের গন্তব্য শূণ্য- ‘ওগো মা, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে! তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে।’

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/149089