রুটির জন্য পথে পথে গাজার শিশুরা

রুটির জন্য পথে পথে গাজার শিশুরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা শহরের রাস্তায় গরম পানির ফ্লাস্ক নিয়ে পথে পথে ঘুরছে ফিলিস্তিনি কিশোর মোহাম্মদ আশুর। সে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এক কাপ কফি কেনার জন্য। ১৫ বছর বয়সে সহপাঠীদের সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল মোহাম্মদের। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের হামলায় বাবা নিহত হওয়ার পর থেকে স্কুল ত্যাগ করতে হয়েছে তার। বাধ্য হয়ে পরিবারের রুটি রোজগারের দায়িত্ব পালনে সে পথে নেমেছে।  

মোহাম্মদ আল জাজিরাকে বলে, ‘আমার এই বোঝা বহন করার নয়। ফ্লাস্ক ও কাপ বয়ে বেড়ানো আমার জন্য কঠিন।  আমি ক্লান্ত, কিন্তু আমার ভাইবোনের ভরণপোষণের জন্য আমাকে এটা করতে হচ্ছে। আমার বাবা বেঁচে থাকলে স্কুলে যেতে পারতাম।’ ইসরায়েলের আগ্রাসনে মোহাম্মদের মতো অসংখ্যা শিশুকে পরিবারের হাল ধরতে হচ্ছে। 

দুই বছরের যুদ্ধে কমপক্ষে ৩৯ হাজার শিশু তাদের বাবা-মায়ের একজন বা উভয়কেই হারিয়েছে। গাজার অর্থনীতি এখন বিধ্বস্ত। আট বছরের কম বয়সী শিশুরাও পরিবার বাঁচাতে কাজে নেমেছে। শিক্ষার পাশাপাশি তাদের হারাতে হয়েছে শৈশবও। মোহাম্মদের মা আতাদ আশুর বলেন, ‘আমি জানি আমার ছেলের স্কুলে পড়া উচিত; কিন্তু আর কোনো উপায় নেই।  তার বাবা নিহত হওয়ার পর আমাদের কোনো আয় নেই।’ গাজার সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, যুদ্ধের চাপ শিশুদের ওপরই সবচেয়ে বেশি। প্রাপ্তবয়স্কদের মতো তাদেরও পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হচ্ছে। ইউনিসেফের মুখপাত্র টেস ইনগ্রাম বলেন, ‘আমরা বহু শিশুকে বর্জ্য পরিষ্কার করতে দেখেছি। অনেক শিশু কাঠের টুকরো সংগ্রহ করে বিক্রি করছে।’   

সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্যমতে, গাজার ছয় লাখের বেশি শিশু এখন আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে রয়েছে। এক লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার। দক্ষিণ গাজার রাফাহ টানেলে আটকে থাকা ৪০ হামাস সদস্যকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। 
রোববার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘পূর্ব রাফাহর অবশিষ্ট টানেলগুলো ধ্বংস করার প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে। গত সপ্তাহে টানেলের ভেতরে ৪০ জনেরও বেশি হামাস সদস্যকে নির্মূল করা হয়েছে।’  রাফাহ শহরটি গাজার ভেতরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দখলে থাকা একটি এলাকা।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/148658