করতোয়া নদীর হিমশীতল পানিতে পাথর সংগ্রহে ব্যস্ত পঞ্চগড়ের নারী শ্রমিকরা
সামসউদ্দীন চৌধুরী কালাম, পঞ্চগড়: বর্তমান উর্দ্ধগতির বাজারে সংসার চালাতে একরকম গলদঘর্ম কর্তা বাবুরা। তাই কিছুটা স্বাচ্ছন্দে সংসার চালাতে হাল ধরেছে নারীরাও। সকালে রোজকার কাজকর্ম শেষে ছোট্ট মাছ ধরার জাল নিয়ে তারা নেমে পড়েন শীতের বরফগলা পানিতে। নদী থেকে পাথর উত্তোলন করে বাড়তি অর্থ উপার্জনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এসকল নারী।
পঞ্চগড় জেলা সদরের করতোয়া, তালমা, চাওয়াই, তেঁতুলিয়ার মহানন্দা, ডাহুক, শাও নদীতে পাথর উত্তোলন করে আসছেন কয়েক হাজার নারী পাথর শ্রমিক। পঞ্চগড় জেলা শহরের ব্যস্ততম করতোয়া সেতু। এই সেতু দিয়ে নদী পার হওয়ার সময় করতোয়া নদীতে ছোট্ট জাল দিয়ে নুড়ি পাথর উত্তোলন করতে দেখা যায় নারী পাথর শ্রমিকদের।
নদীর বালু জালে তুলে তা পানিতে সেচে নুড়ি পাথর সংগ্রহ করেন এসব নারীরা। বস্তা ভর্তি এসব নুড়ি পাথর বিকেলে ব্যবসায়ীরা এসে মেপে নিয়ে নগদ টাকা প্রদান করছেন। এভাবে প্রতিদিন পাথর তুলে তারা উপার্জন করেন তিন থেকে পাঁচশ টাকা। গৃহকর্তার আয়ের সাথে এই টাকা জোড়াতালি দিয়ে কোনভাবে তাদের দিন কেটে যায়। মাঝখানে বিরতি শুধু বর্ষায়। তখন নদী পানিতে টইটুম্বুর।
পঞ্চগড় পৌর এলাকার রামের ডাঙ্গা মহল্লার সাহেদা বেগম(৫০) জানান, আমাদের জীবনটাই করতোয়া নদী কেন্দ্রীক। নদী থেকে পাথর না তুলতে পারলে পেটে ভাত যায় না। শুধু তিনি একা নন, আশপাশের অনেক মহিলাকে নিয়ে সকালে সংসারের সব কাজ শেষ করে নদীতে নামেন তারা।
সাথে নিয়ে যান বাড়ির গরু-ছাগলও। নদীর মাঠে সেগুলো চড়তে দিয়ে নেমে পড়েন নদীতে। দুপুরের খাবার খান নদীর বালুচড়ে বসেই। সারাদিন ৪-৬ সিএফটি পাথর তুলে কোনোদিন ৩শ’ আবার কোনোদিন ৫শ’ টাকা পর্যন্ত পান। এভাবেই চলে তাদের সংসার।
ক্ষুদ্র পাথর ব্যবসায়ী মোকলেছার রহমান বলেন, প্রতিদিন বিকেলে নদীর পাড়ে গিয়ে পাথর সংগ্রহ করি। প্রতি সিএফটি পাথরের জন্য ৭০-৭৫ টাকা দেওয়া হয়। সেখানেই পাথর মেপে নিয়ে টাকা পরিশোধ করেন। সন্ধ্যায় ট্রলিতে করে সেই পাথর নিয়ে আসেন তারা।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/148578