লক্ষ্মীপুরে ওয়ার্কশপের আড়ালে তৈরি করা হতো আগ্নেয়াস্ত্র

লক্ষ্মীপুরে ওয়ার্কশপের আড়ালে তৈরি করা হতো আগ্নেয়াস্ত্র

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে একটি ওয়ার্কশপকে আড়াল করে অবৈধ অস্ত্র তৈরির গোপন কারখানার সন্ধান পেয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে দেশীয় পিস্তল, স্প্লিন্টার ও অস্ত্র তৈরির নানা সরঞ্জাম।

আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার পশ্চিম চন্দ্রগঞ্জ বাজারের একটি ভাড়া করা দোকানে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাদাত হোসেন টিটোর নেতৃত্বে দলটি অভিযান চালায়। তবে অভিযানের সময় ওয়ার্কশপের মালিক নুর উদ্দিন জিতু পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, জিতু দীর্ঘদিন ধরে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে একটি ওয়ার্কশপের ব্যবসার আড়ালে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করে আসছিলেন। বাইরে থেকে দেখলে এটি সাধারণ মেরামত বা কাঠের কাজের দোকান মনে হলেও ভেতরে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামাদি, কাঠের নকশা, স্প্রে এবং ছত্রভঙ্গ অবস্থায় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পাওয়া যায়। জিতুর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জগদীশপুরে; তিনি আব্দুল গোফরানের ছেলে।

ডিবি পুলিশ জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওয়ার্কশপে প্রবেশ করলে মালিক জিতু দ্রুত সরে যান। পরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে একটি দেশীয় পিস্তল, কয়েকটি স্প্লিন্টার, অস্ত্র তৈরির ব্যবহৃত স্প্রে এবং রাইফেল–শর্টগানের হাতলের মতো নকশা করা প্রায় ২৫টি কাঠের টুকরো উদ্ধার করে। এসব কাঠের নকশা অস্ত্রের বাহু বা হ্যান্ডগ্রিপ তৈরিতে ব্যবহার করা হতো বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, “জিতু দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্কশপের আড়ালে অবৈধভাবে অস্ত্র তৈরি ও বিক্রি করছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত সরঞ্জামগুলো তার বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ। তাকে আটক করতে বিশেষ অভিযান চলছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা করা হবে।”

অভিযানের কারণে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বহুদিন ধরে সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখলেও তারা বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারেননি। ডিবির এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এই ঘটনায় অবৈধ অস্ত্র তৈরির একটি সক্রিয় চক্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে বলে মনে করছে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ বলছে, জিতুকে গ্রেপ্তার করতে পারলে অস্ত্র তৈরির পুরো নেটওয়ার্ক উন্মোচন করা সম্ভব হবে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/148565