নারায়ণগঞ্জে পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা যুবক আটক

নারায়ণগঞ্জে পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা যুবক আটক

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাহমুদনগর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে পাসপোর্ট নিতে এসে ধরা পড়েছেন আজিজ খান নামের এক রোহিঙ্গা যুবক।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের সময় তার পরিচয় গরমিল ধরা পড়লে অফিসের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। তিনি নিজেকে হাফেজ পরিচয় দিয়ে আব্দুল আজিজ নাম ব্যবহার করেন। বয়স দেখানো হয় ২৫ বছর, জন্ম তারিখ ২০০০ সালের ১০ জানুয়ারি। বাবার নাম হাজী নজিবুল্লাহ এবং মায়ের নাম শুকরা বেগম উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু বায়োমেট্রিক স্ক্যানেই বদলে যায় পুরো চিত্র। মিলানোর সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যায় তার আসল পরিচয় তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী আজিজ খান। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন। রোহিঙ্গা তথ্য অনুযায়ী তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ২০০১ সালের ৫ জানুয়ারি, বাবার নাম- সালামত খান। তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। তার রোহিঙ্গা রেফারেন্স নম্বর ১০৮২০১৮০৪১০০৮১৯৩৫।

জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, বর্তমান ঠিকানা দেখানো হয়েছিল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা গ্রাম। এখান থেকেই তিনি চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন। স্থায়ী ঠিকানা দেখানো হয় চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দক্ষিণ হাশিমপুরে। আর পাসপোর্টের আবেদনে বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করেন সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকা। নজিবুল্লাহ ও শুকরা বেগম নামে যাদের বাবা-মায়ের তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তাদের ঠিকানা দেখানো হয় চট্টগ্রামের চন্দনাইশের খাজীরপাড়া ও হাশিমপুর এলাকায়। দুজনই চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এনআইডি সংগ্রহ করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজ স্বীকার করেছেন তিনি রোহিঙ্গা। তিনি ১৮ হাজার টাকার বিনিময়ে মুন্সিগঞ্জ থেকে এনআইডি সংগ্রহ করেছেন। আমরা নিয়মিতভাবেই আবেদনকারীদের সব নথি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করি। আজ যে ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, তিনি ভুয়া এনআইডি ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে পাসপোর্ট নিতে এসেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে তার প্রকৃত পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরই আমরা তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করি। পাসপোর্ট একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি এখানে কোনোভাবেই ভুয়া তথ্য গ্রহণযোগ্য নয়। আটক আজিজ খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন দালালচক্র ও সংশ্লিষ্টদের খুঁজে দেখছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/148554