বাবার সাক্ষাৎ নেই, সুস্থ থাকারও তথ্য নেই: ইমরান খানের ছেলে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের খোঁজ-খবর না পেয়ে তীব্র উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার ছেলে কাসিম খান। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, ৮৪৫ দিন ধরে তার বাবা কারাগারে ও গত ছয় সপ্তাহ ধরে তাকে সম্পূর্ণ একা ডেথ সেলে রাখা হয়েছে। আদালতের স্পষ্ট আদেশ থাকা সত্ত্বেও খানের বোনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও দাবি করেন কাসিম খান।
কাসিম লিখেছেন, কোনো ফোন কল নেই, কোনো সাক্ষাৎ নেই, বাবার সুস্থতার কোনো তথ্যও নেই। আমি ও আমার ভাই বাবার সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, এই অন্ধকারে আটকে রাখা কোনো নিরাপত্তা প্রটোকল নয়। তার অবস্থা গোপন করা ও আমাদের পরিবারকে তার নিরাপত্তা সম্পর্কে কিছু না জানাতেই ইচ্ছাকৃতভাবে এসব করা হচ্ছে।
কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে কাসিম বলেন, আমার বাবার নিরাপত্তা ও তাকে এমন অমানবিকভাবে আলাদা করে রাখার প্রতিটি পরিণতির পূর্ণ আইনগত, নৈতিক ও আন্তর্জাতিক দায় পাকিস্তান সরকার ও তাদের ‘মনিবদের’ ওপরই বর্তাবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রতিটি কণ্ঠ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জরুরি হস্তক্ষেপের আবেদন জানাচ্ছি। তার জীবিত থাকার নিশ্চিত তথ্য দেওয়া হোক, আদালতের আদেশ অনুযায়ী সাক্ষাৎ নিশ্চিত করা হোক, এই অমানবিক বিচ্ছিন্নতা বন্ধ করা হোক ও রাজনৈতিক কারণে বন্দী পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার মুক্তি দাবি করা হোক।
এদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান খানের বোন নোরিন নিয়াজি বলেন, আমরা কিছুই জানি না। তারা আমাদের কিছু বলছে না, কাউকে দেখা করতে দিচ্ছে না। দলের লোকজনের নির্ধারিত সাক্ষাৎও বাতিল করা হয়েছে। চার সপ্তাহ ধরে আমাদের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ। ভারতে তো এমন খবরও ছড়িয়েছে যে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
নোরিনের অভিযোগ, ইমরান খানপন্থিদের ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠানগুলো পুলিশের হাত মুক্ত দিয়েছে। শিশু, নারী, বয়োবৃদ্ধ, কারও প্রতিই সম্মান বা সহানুভূতির বিন্দুমাত্র আচরণ নেই বলেও অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, আমাদের থামাতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ও তাদের এমন পর্যায়ের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে যে যা খুশি করতে পারে। পাকিস্তানে আগে কখনো এমন হয়নি। নারীদের এভাবে অপমান করা হয়নি। সামনে নারী-শিশু কিংবা বয়োবৃদ্ধ, যেই থাকুক না কেন, এই প্রথমবার এমন নির্লজ্জভাবে মানুষকে পেটানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির অবস্থার খোঁজ নিতে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে যান খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সুহাইল আফ্রিদি। এ সময় পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতা ও বহু সমর্থক কারাগারের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
তবে ইমরান খানের আরেক বোন আলেমা খান ভাইয়ের অবস্থার খবর নিতে কারাগারে যেতে চাইলে তাকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়নি। এ ঘটনার পর তার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে নানা গুজব, এমনকি কিছু মিডিয়ায় মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ এসব গুজব প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারেই আছেন ও সুস্থ আছেন।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/148149