কারাগারে ইমরান খানকে হত্যার গুজব, যা বলছে কর্তৃপক্ষ

কারাগারে ইমরান খানকে হত্যার গুজব, যা বলছে কর্তৃপক্ষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে কারাগারে হত্যার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া তাকে গোপনে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আদিয়ালা জেল প্রশাসন জানিয়েছে, ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জন ভিত্তিহীন। ইমরান খানকে জেল থেকে অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হয়নি। প্রশাসনের দাবি, তিনি জেলের ভেতরেই আছেন এবং সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এক বিবৃতিতে রাওয়ালপিন্ডি কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ইমরান খানকে স্থানান্তর করার খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি সুস্থ আছেন এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তার স্বাস্থ্য নিয়ে যে নানা জল্পনা চলছে তা ‘নির্বিচার ও ভিত্তিহীন’। জেল কর্তৃপক্ষ তার সুস্থতা নিশ্চিত করছে।

এদিকে পৃথক বক্তব্যে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজা আসিফ দাবি করেন, ইমরান খান জেলে ‘যথেষ্ট আরাম-আয়েশ’ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘উনার জন্য যে খাবারের মেনু আসে, সেটা পাঁচতারকা হোটেলেও পাওয়া যায় না।’ তিনি আরও জানান, ইমরান খানের সেলে টেলিভিশন আছে যেখানে তিনি যে কোনো চ্যানেল দেখতে পারেন। এ ছাড়া ব্যায়ামের জন্য আলাদা মেশিনও রাখা হয়েছে।

খাওয়াজা আসিফ নিজের কারাবাসের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, আমরা ঠান্ডা মেঝেতে ঘুমাতাম, জেলের সাধারণ খাবার খেতাম। জানুয়ারিতে মাত্র দুইটা কম্বল ছিল, গরম পানিও ছিল না। তখনকার সুপারিনটেনডেন্ট আসাদ ওয়ারাইচ নিজে এসে আমার সেল থেকে গিজার খুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, ইমরান খানকে একটি ডাবল বেড ও ‘ভেলভেট ম্যাট্রেস’ দেওয়া হয়েছে। ব্যঙ্গ করে তিনি আরও বলেন, তার উচিত জেলের লাউডস্পিকার দিয়ে তার ওয়াশিংটন এরিনা বক্তৃতা শোনা। 

ইমরান খান ২০২৩ সাল থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি। তার বোনদের অভিযোগ, গত তিন সপ্তাহেও তারা ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পাননি। এজন্য তারা এই সপ্তাহে কারাগারের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিলে পুলিশ আকস্মিকভাবে লাঠিপেটা শুরু করে। পিটিআইয়ের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, ইমরান খানের বোন ও সমর্থকরা শান্তিপূর্ণভাবে বসে থাকা অবস্থায় পুলিশ হঠাৎ তাদের ওপর হামলে পড়ে। দলটি ঘটনার স্বাধীন তদন্ত দাবি করেছে।

এদিকে পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ইমরান খানকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে। তাকে অন্যদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি বই, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং আইনজীবীদের সঙ্গেও দেখা করার অনুমতি সীমিত করা হয়েছে।

আইনজীবী খালিদ ইউসুফ চৌধুরী বলেন, ‘এখানে আইনের কোনো নিয়ম নেই। জঙ্গলের আইন চলছে, যেখানে শুধু শাসকেরই অধিকার থাকে।’ এমনকি খাইবার-পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোয়েল আফ্রিদির সাতবার চেষ্টা করলেও তাকে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। পিটিআইয়ের অভিযোগ, জেল কর্তৃপক্ষকে একজন সেনা কর্মকর্তা নিয়ন্ত্রণ করছেন।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/148035