ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দুধকুমার নদ থেকে বালু উত্তোলন ভাঙনের তীব্রতা বাড়ার আশঙ্কা
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: নাগেশ্বরীতে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে প্রমত্তা দুধকুমার নদ থেকে বালু উত্তোলন করছে একটি মহল। এতে ভাঙনের তীব্রতা বাড়বে তীরে। ঝুঁকিতে তীরবর্তী তফসিলভুক্ত জমি ও সরকারি আবাসন প্রকল্প। এটি বন্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন জমির মালিকরা।
জানা যায়, আরডিআরএস দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসকরণ (ডিআরআর-আরআরএপি) প্রকল্পের অধীনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড এ বটতলা বাজার হতে ওয়াবদা বাধ ও টেংগরমারী সীমান্ত হতে ভাটি দিকদারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ২ হাজার ৩১০ মিটার মাটির রাস্তা সংস্কার কাজ চলছে। এর প্রাক্কলন ব্যয় ৯৯ লাখ ৪ হাজার ১৭১ টাকা।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়নে কাজ করছে ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। সরেজমিন দেখা যায়, মাটির ঐ রাস্তায় মাঝের অংশ খুড়ে দু’পাশে উচু করে সে অংশ নাগেশ্বরীর নুনখাওয়া দক্ষিণ সারিসুরি এলাকায় আবাসন প্রকল্পের খুব কাছে দুধকুমার নদে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে এনে ভরাট করা হচ্ছে।
যা বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ ও সংশোধিত আইন ২০২৩ পরিপন্থী। আইন অনুযায়ী বালু বা মাটি উত্তোলন বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ড্রেজিংয়ের ফলে কোন নদীর তীর ভাঙনের শিকার হলে এবং যদি ১ কিলোমিটারের মধ্যে সরকারি বা বেসরকারি কোন স্থাপনা বা আবাসিক এলাকা থাকে তাহলে সেখান থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। এক্ষেত্রে বালু উত্তোলনে বসানো ড্রেজারের খুব কাছে রয়েছে একটি সরকারি আবাসন প্রকল্প।
এদিকে নদ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে এবারে প্রমত্তা দুধকুমারের তীরে ভাঙন আরো তীব্র হতে পারে। এমনিতেই দুধকুমার সারা বছরই তীরে ভাঙন চালায়। প্রতিবছর গিলে খায় অসংখ্য ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, বাগান ও স্থায়ী স্থাপনা। ফলে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের অতি ঝুঁকিতে পড়েছে তীরবর্তী তফসিলভুক্ত জমি ও সরকারি আবাসন প্রকল্প। বাধ্য হয়ে জমির মালিকরা নদ থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
জমির মালিক আব্দুল হাকিম, আব্দুল হামিদ, আসাদুল, নুর জামাল, আমিনুল ইসলাম জানান, জমি হারানোর আশঙ্কায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি। উল্টো আমাদের জানিয়েছে সরকারি অনুমতি নিয়ে তারা বালু উত্তোলন করছে। আমরা আমাদের জমি রক্ষায় দ্রুত তা বন্ধের দাবি জানাই।
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, আমি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেছি। সেটি পাশ হয়েছে কিনা জানিনা।
তবে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌখিকভাবে কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন। নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহনুর জামান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147989