তিস্তার চরাঞ্চলে মিষ্টি কুমড়া চাষ
রুহুল ইসলাম রয়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর) : রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে এবার ব্যাপক হারে মিষ্টি কুমড়া চাষ হয়েছে। বীজ থেকে ভালো চারা গজানোয় কৃষকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। বন্যা ও নদীভাঙনে প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত চরাঞ্চলের মানুষ জীবিকার তাগিদে বর্ষার পর জেগে ওঠা বালুচরে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেন। ধু-ধু বালুর জমিতে চাষাবাদ কঠিন হলেও শাকসবজি, ভুট্টা, বাদাম ও মিষ্টি কুমড়ার কদর এখানে বেশি। বালুর জমিতে তুলনামূলক কম খরচে ভালো ফলন হওয়ায় কুমড়া চাষের দিকেই ঝুঁকছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলায় মিষ্টি কুমড়া চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬০ হেক্টর। ইতোমধ্যে এ উপজেলায় ৯৫ হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সরেজমিন তিস্তা নদীর বিভিন্ন চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা কুমড়া গাছের সারি ঠিক করছেন। কেউ বা কুমড়া ক্ষেতে পানি দিচ্ছেন। আবার কেউ চারা রোপণের জন্য বালুচরে গর্ত তৈরি করে বালু সরিয়ে সেখানে বাইরে থেকে আনা পলিমাটি ও জৈবসার মিশিয়ে জমি প্রস্তুত করছেন।
উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের চর চালাপাকের কুমড়া চাষি রাজা মিয়া (৪৭) বলেন, আমি ৬০ শতক জমিতে কুমড়া আবাদ করেছি। প্রতিটি গর্তে ৩-৪টি করে বীজ বপনের পর নিয়মিত পানি সেচ ও কিছু পরিচর্যাই যথেষ্ট। বালুর জমিতে গাছ স্বভাবিকভাবেই ছড়িয়ে পড়ে, তাই আলাদা মাচা দিতে হয় না। আশা করছি ভালো দাম পাবো।
একই এলাকার চাষি নজরুল ইসলাম (৫২) বলেন, একেকটি গাছে প্রায় ১০টি কুমড়া পাওয়া যায়, যার ওজন ৩ থেকে ৪ কেজি। ক্ষেতেই প্রতিটি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে। লক্ষীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী বলেন, বর্ষায় তিস্তার খরস্র্রোত চরাঞ্চলকে প্লাবিত করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। একই সাথে ভাঙনে বিলীন হয় জমি ও বসতভিটা। কিন্তু হেমন্তে নদীর পানি কমে এলে বুকে জেগে ওঠে অসংখ্য বালুচর, যা পরে কৃষকের আশীর্বাদে পরিণত হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম বলেন, চরাঞ্চলের কুমড়া চাষিদের বীজ ও সারসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত প্রযুক্তিগত পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে, যাতে তারা ভালো ফলন পেতে পারেন।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147869