জয়পুরহাটে নায্যমূল্যের সার পাচ্ছেন না কৃষক
জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি : জয়পুরহাটে নায্যমূল্যে সার না পাওয়ায় বেশি দামে সার কিনছেন কৃষকরা। কৃষকদের অভিযোগ বাজারে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের দাম সরকার নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত চার থেকে পাঁচ’শ টাকা বেশি নিচ্ছেন সার ব্যবসায়ীরা। আবার সঠিক দামে সার মিললেও সাথে গছানো হচ্ছে বেশি দামের প্যাকেটজাত দস্তা ও বোরন জৈব সার।
কৃষকদের দাবি সারের দাম বেশি নেয়ায় আলু চাষে তাদের বিড়ম্বনা বেড়েছে। প্রতিবাদ করলেই সার দিচ্ছেন না। আবার দেওয়া হচ্ছে না সার বিক্রির কোন রশিদও। রশিদ চাইলে সার বিক্রি করছেন না। চলতি মৌসুমে আমন ধান কাটা-মারার পর আলু রোপণের প্রস্তুতিকালে সরকারি মূল্যে নন-ইউরিয়া টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি রাসায়নিক সার চাহিদামত কিনতে পারছেন না কৃষকরা।
বস্তা প্রতি চার-পাচ’শ টাকা বেশি না দিলে সার দেওয়া হচ্ছে না। আবার সঠিক দামে পাওয়া গেলেও সাথে গছানো হচ্ছে মোটা অঙ্কের প্যাকেটজাত জৈব সার। ৫০ কেজির এক বস্তা টিএসপি সারের দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা হলেও কৃষকদের তা কিনতে হচ্ছে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকায়। একইভাবে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে ডিএপি সারেরও। দোকান থেকে সার কিনলেও দেওয়া হচ্ছে না বিক্রি রশিদও।
কৃষকরা বলছেন, বাজারের প্রতিটি দোকানে সারের দাম বেশি নেওয়া হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সারের দাম যাচাই করার জন্য মাঝেমধ্যে বাজার মনিটরিং করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট না হওয়ায় কৃষকদের কোন লাভ হয়নি। কারণ, বাজার মরিটরিং শুরুর আগেই ব্যবসায়ীরা তা জেনে যান।
ফলে তারা আগে থেকেই সাবধান হওয়ায় দাম বেশি নেওয়ার কোন আলামতই তাদের চোখে ধরা পড়ে না। আবার কৃষকরাও ঝক্কি এড়াতে মনিটরিং টিমের সামনে মুখ খুলতে চান না। কারণ, অভিযোগ করলে তার কাছে কোন ব্যবসায়ী সার বিক্রি করবেন না। এতে তাদের বিপদ আরো বেড়ে যাবে।
জেলা সার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রওনকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কৃষি অধিদপ্তরে বিপণন শাখা থেকে ব্যাঙের ছাতারমত ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। এ সমস্ত ডিলারদের হাত বদলের কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে এ ধরণের বৈষম্য বিরাজমান। যতই হাত বদল হবে, ততই দাম বাড়বে। যার জন্য আমরা যারা ডিলার পর্যায়ে আছি তারা সরাসরি কৃষকের কাছে সার বিক্রি করছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাদিকুল ইসলাম বলেন, জেলায় এবার ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসে জেলায় ২৯ হাজার ৯৩২ মেট্রিকটন নন-ইউরিয়া সারের চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ মিলেছে ১৩ হাজার ৭১০ মেট্রিকটন। জেলায় সারের পর্যাপ্ত মজুদ আছে, সঙ্কট বা দাম বেশি নেওয়ার কোন অভিযোগ তারা পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147829