ডানার দোলায় প্রাণবন্ত রাবি ক্যাম্পাস আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি
রাবি সংবাদদাতা: ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে শীতের আগমন মানেই কুয়াশার চাদরে মোড়ানো প্রকৃতি। এসময়টাতেই উত্তর মেরুর সাইবেরিয়া, রাশিয়া, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন্স ও এন্টার্কটিকার মতো শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে খাদ্যাভাব ও তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচতে হাজার মাইল পাড়ি দেয় নানা প্রজাতির অতিথি পাখি। তুলনামূলক উষ্ণ আবহাওয়া ও সমৃদ্ধ জীববৈচিত্রের কারণে বাংলাদেশ প্রতিবছরই হয়ে ওঠে পাখিদের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়।

দেশে শীত এখনও পুরোপুরি অনুভূত না হলেও প্রকৃতি মুখরিত হয়ে উঠছে অতিথি পাখিদের ডানার শব্দে। দেশের নানা বনাঞ্চল, চর ও জলাধারগুলোর মতোই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসও এর ব্যতিক্রম নয়। সারা বছরই অসংখ্য পাখির কলতানে প্রাণবন্ত রাবি ক্যাম্পাস শীতের শুরুতেই রঙ বদলে নেয়। প্রতিবছরের মতো এবারও ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি ক্যাম্পাসে এসে ভিড় জমাতে শুরু করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জলাশয়ে সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে হাঁসজাতীয় পাখিকে। এরমধ্যে ছোট সরালি; পাশাপাশি রয়েছে বড় সরালি, ল্যাঞ্জা হাঁস, ঝুঁটি হাঁস, খুঁতে হাঁসসহ আরও কয়েকটি প্রজাতি। কয়েক বছর ধরে নিয়মিত আসছে পেরেগ্রিন ফ্যালকনও— যারা প্রায় পাঁচ মাস ক্যাম্পাসে অবস্থান করে।
সরেজমিন দেখা যায়, খালেদা জিয়া, তাপসী রাবেয়া, রহমতুন্নেছা ও রোকেয়া হলের পেছনের পুকুর, শামসুজ্জোহা হলের পাশের জলাধারসহ বিভিন্ন স্থানে বসেছে অতিথি পাখির মেলা। কখনো আকাশে উড়াউড়ি আবার কখনো জলাধারে নেমে জলকেলি, তাদের এই কোলাহল দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা।
রাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে উঁচু গাছপালা, খোলা জলাশয় ও পর্যাপ্ত খাদ্য থাকায় প্রতি শীতেই পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে। এবারও আসতে শুরু করেছে প্রচুর পাখি। নিরাপদ পরিবেশ থাকায় অনেকসময় তারা এখানে বাসাও বাঁধে।
পাখি বিষয়ক গবেষণা করা প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আমিনুজ্জামান মো. সালেহ্ রেজা জানান, নভেম্বরের শেষ দিকেই সাধারণত পাখিগুলো আসে। আগের বছরের তুলনায় এবার সংখ্যা আরও বেশি। তবে তিনি অভিযোগ করেন উৎসাহী অনেকে ঢিল ছুঁড়ে বা অতিরিক্ত কাছে গিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে পাখিদের বিরক্ত করছে।
এতে তারা আতঙ্কিত হয়; অভয়ারণ্য তৈরি করতে না পারলে ভবিষ্যতে তারা আর আসবে না। রাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে পাখি হত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাদের কোনো ধরনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয় না। পরিযায়ী পাখির অবাধ বিচরণ যাতে ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসন সবসময় সতর্ক রয়েছে।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147738