৯৭ শতাংশ নারী যে ধরনের সম্পর্ক পছন্দ করেন
লাইফস্টাইল ডেস্ক: বর্তমানে অনেক কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় বদলাচ্ছে সম্পর্কের ধরণ। তরুণদের কাছে দ্রুত সম্পর্ক স্থাপন বা মজা, ফ্লিং নয়। বরং তাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে স্থায়ী সম্পর্ক, মানসিক স্থিতিশীলতা ও সমানাধিকার। ভারতের আইসেলের সর্বশেষ জরিপ ‘দ্যা কমিটমেন্ট ডেকেড’-এ দেশটির ৩,৪০০ শহুরে একক অংশগ্রহণ করেছেন। এতে দেখা গেছে, দেশের ৯৭ শতাংশ নারী এখন অস্থায়ী ফ্লিং নয়। বরং স্থায়ী সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
স্থায়ী সম্পর্কের দিকে ঝোঁক
পুরনো দিনে যুবক-যুবতীরা একসঙ্গে একাধিক মানুষকে চ্যাট করত বা শুধুই মজা করত। এখন সেই মনোভাব বদলেছে। জরিপে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ মিলেনিয়াল নারী বন্ধুত্ব নয়, স্থায়ী সম্পর্ক চাইছেন। এক-তৃতীয়াংশ এমনকি প্রেমের সম্পর্কের এক বছরের মধ্যে বিয়ে করার পরিকল্পনা করছেন। পুরুষরাও ধীরে ধীরে একই পথে এগোচ্ছে। ৮০ শতাংশ জেন জেড ও ৮৮ শতাংশ মিলেনিয়াল পুরুষ এখন সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ২২ বছর বয়সী জ্যোতিরাদিত্য সিং বলেন, ‘আমি স্থায়ী সম্পর্ক পছন্দ করি। সত্যিকারের প্রতিশ্রুতিতে দুইজন একে অপরকে সমর্থন করে এবং একসাথে এগোতে পারে।’
মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব
তরুণরা এখন মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। জরিপে দেখা গেছে, ৬৭ শতাংশ জেন জেড নারী মানসিক সমস্যার কারণে সম্পর্ক শেষ করবেন। পাশাপাশি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভারতীয় মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে সম্পর্ক এড়িয়ে চলেছেন। ২১ বছর বয়সী খুশি সুকিজা বলেন, ‘যদি সম্পর্ক মানসিক চাপ দেয়, তখন বের হয়ে আসা উচিত। সম্পর্ক যদি ক্লান্তিকর হয়, দূরে থাকা ভালো।’
সাইকোলজিস্ট অর্পিতা কোহলি বলেন, ‘আজকের যুবকরা ক্ষতিকর সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসার সাহস রাখে। মানসিক বিষক্রিয়া, অসম্মান বা সমর্থনের অভাব দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করতে পারে। ব্রেকআপে কোনো লজ্জা নেই। তাই মানুষ মানসিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’
সমানাধিকারের পাশাপাশি অর্থনীতি
আজকের সম্পর্ক শুধু মানসিক নয়, আর্থিক সমতার কথাও গুরুত্বপূর্ণ। জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ নারী প্রথম ডেটে বিল ভাগ করতে চান, আর ৪২ শতাংশ পুরুষ এখনও মনে করেন তাদেরই দিতে হবে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থী রক্ষিতা বলেন, ‘যখন দুইজনই অবদান রাখে, তখন সম্পর্কের ভারসাম্য ও পারস্পরিক সম্মান বজায় থাকে। একে অপরের উপর সব চাপ পড়ে না।’
আজকের যুবকরা চাইছে স্থিতিশীল, মানসিকভাবে স্বাস্থ্যসম্মত সম্পর্ক। অস্থির আচরণ, প্রচেষ্টা নেই, মানসিকভাবে অপ্রাপ্য—সবই এখন রেড ফ্ল্যাগ। ভারতের ডেটিং সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তরুণরা এখন চাই সমানাধিকারের সম্পর্ক, মানসিক সচেতনতা এবং একে অপরের প্রতি যত্ন ও সমর্থন।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147671