বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মুক্তির দাবি করা বাউলদের ওপর হামলা
ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে অবস্থান নেওয়া বাউলদের ওপর হামলা চালিয়েছে কথিত ‘তৌহিদি জনতা’। রবিবার ১০টার পর মানিকগঞ্জ শহরের শহীদ মিনারের পাশে বাউলরা অবস্থান নিলে এ হামলা করা হয়। হামলায় তিন জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। এ ঘটনায় শহর জুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আহতরা হলেন– শিবালয় উপজেলার শাকরাইল গ্রামের আব্দুল আলীম (২৫), সিংগাইরের তালেবপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম (২৯) এবং হরিরামপুরের কামারঘোনা গ্রামের জহিরুল ইসলাম (৩২)।
এর আগে সকাল ১০টায় কথিত ‘তৌহিদি জনতা’ মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে পোস্ট অফিস মোড়ে সমাবেশ করে। তারা গ্রেফতার বাউল শিল্পী আবুল সরকারের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে।
অপরদিকে, সমাবেশ চলাকালে শহীদ মিনারের পাশে অবস্থান নেন বাউল শিল্পী আবুল সরকারের লোকজন। এ সময় ‘তৌহিদি জনতা’ বাউল শিল্পী পক্ষের লোকজনদের ধাওয়া দেয়। এ সময় বাউলরা বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করেন এবং একপর্যায়ে কয়েকজন পুকুরের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে হামলা বাঁচার চেষ্টা করেন। এই ধাওয়ায় তিন বাউল শিল্পী গুরুতর আহত হন। আহতদের মানিকগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন,‘ “তৌহিদি জনতার” বিক্ষোভ মিছিলটি শহরে প্রবেশ করার সময় হঠাৎ করেই মিছিলের ভেতর থেকে কিছু লোকজন বাউলদের উদ্দেশ করে ধাওয়া দেয়। মুহূর্তেই পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং তিন বাউল শিল্পী আহত হন। এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
এর আগে ৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওরের জাবরা এলাকায় গানের আসরে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ওঠে বাংলাদেশ বাউল সমিতির সভাপতি আবুল সরকারের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে বৃহস্পতিবার ২০ নভেম্বর তাকে গ্রেফতার করে মানিকগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর মুফতি আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি ধর্ম অবমাননার মামলা করেন। রবিবার দুপুরে আদালতে জামিন শুনানির পর আবুল সরকার জামিন পাননি।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147572