ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নতুন অভিযান শুরুর ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন খুব শিগগির ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে নতুন ধাপের সামরিক ও গোয়েন্দা অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন চারজন মার্কিন কর্মকর্তা। তারা সবাই রইটার্সকে শর্তসাপেক্ষে এসব তথ্য দিয়েছেন, কারণ বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল।
ঠিক কখন বা কী পরিসরে অভিযান শুরু হবে-তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, তাও স্পষ্ট নয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বড় আকারের প্রস্তুতির পর থেকে এসব জল্পনা আরও বেড়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে দুজন বলেন, নতুন অভিযানের প্রথম ধাপে সম্ভবত গোপন অপারেশনই চালানো হবে।
একজন জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের দেশে মাদক ঢোকানো এবং যেসব ব্যক্তি এতে জড়িত-তাদের থামাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রয়োজনে আমেরিকার সব শক্তি ব্যবহার করতে প্রস্তুত। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করে আসছে যে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অবৈধ মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা মাদকের জন্য তার সরকার আংশিকভাবে দায়ী। মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দুজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিবেচনাধীন বিকল্পগুলোর মধ্যে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টা পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মাদুরো, যিনি ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন, অভিযোগ করেছেন যে ট্রাম্প তাকে অপসারণ করতে চান, এবং ভেনেজুয়েলার জনগণ ও সেনাবাহিনী যেকোনো বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করবে। এদিকে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানো হচ্ছে এবং ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় সিআইএ-কে গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সতর্কতা জারি করে, যার পর তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থা সেখানে থেকে নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করেছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র কার্টেল ডি লস সোলোসকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে, অভিযোগ রয়েছে যে এই সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহে জড়িত। ওয়াশিংটন বলছে, মাদুরোই এই নেটওয়ার্কের নেতৃত্ব দেন, যদিও তিনি তা অস্বীকার করেছেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করলে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে নতুন অনেক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
যদিও ট্রাম্প মাদুরোর সম্পদ ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন, তিনি একই সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার সম্ভাবনাও উন্মুক্ত রেখেছেন। দুই দেশের মধ্যে কথোপকথন চলছে বলেও মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদিকে মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোরড স্ট্রাইক গ্রুপসহ ১৬ নভেম্বর ক্যারিবিয়ানে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে সেখানে অন্তত সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147544