ত্রিমোহনী-রাজারহাট-তিস্তা আঞ্চলিক মহাসড়কে বাড়ছে মৃত্যু ঝুঁকি

ত্রিমোহনী-রাজারহাট-তিস্তা আঞ্চলিক মহাসড়কে বাড়ছে মৃত্যু ঝুঁকি

প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের ত্রিমোহনী-রাজারহাট-তিস্তা পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটিতে ওভার লোড ও ভারী যানবাহন চলাচল করায় দিন দিন মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গত দুই বছরে কমপক্ষে ৬জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আহত হয়েছে প্রায় ৪০/৫০ জন। ভারী যানবাহনের কারণে রাজারহাট শহরে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগেই থাকে। চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ।

গ্রামীণ এই সড়কে ওভার লোড পাথর, বালুর গাড়ি সেই সাথে দূরপাল্লার দিবা নৈশ কোচসহ শত শত গাড়ি চলাচল করছে। আঞ্চলিক মহাসড়কে এসব ভারী যানবাহন যাতায়াত করায় দিন দিন ফেটে যাচ্ছে সড়কটি। তাই সড়কটি দিয়ে ভারী ট্রাকসহ নৈশ কোচগুলো চলাচলে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠছে। রাজারহাটবাসী বিভিন্ন সময় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করলেও কোন কাজ হয়নি।

৪ বছর আগে কুড়িগ্রামের ত্রিমোহনী হয়ে রাজারহাট উপজেলা শহর থেকে তিস্তা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটি নতুন করে সংস্কার করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। রাজারহাট ও কুড়িগ্রামের মানুষ এই সড়ক দিয়ে দ্রুত সময়ে রংপুরসহ সারাদেশে চলাচল করে। সড়কের একপাশে রয়েছে দু’টি বিশাল বিল। অন্যদিকে বাঁশবাগান ও বাড়ি।

এছাড়া তিস্তা বাজারের আগে রয়েছে আঁকাবাঁকা কয়েকটি বাক। তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক চালু হবার পর সড়ক ও জনপদের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রামীণ এই রাস্তায় মাইক্রোবাস, মিনিবাস, কার, অটো রিকশা, মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে। কোন ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। প্রথমদিকে নিয়ম মেনে চললেও সময় যতই গড়িয়ে যায় এই সড়ক দিয়ে বড় বড় পাথর বোঝাই ট্রাক, বালুর ট্রাক, ঢাকাগামী দিবা ও নাইট কোচ সহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ট্রাক চলাচল শুরু করে।

পার্শ্বর্বতী হাই ওয়ে সড়ক দিয়ে চলাচল না করে এই সড়ক ব্যবহার করছে। এই সড়কের মাঝে রয়েছে দুটি ছোট ফুটব্রীজ। যার সব পণ্য বোঝাই ট্রাকের বহন করার ক্ষমতা নেই। যে কোন সময় ব্রীজটি ধ্বসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বাড়ছে দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে মানুষ।

রাজারহাট ইউনিয়নের প্রাক্তন মেম্বার আবদুল জলিল বলেন, ভারী পণ্য বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে  রাস্তাটি। সরকার যেন এই রাস্তায় ভারী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে নিষেধের ব্যবস্থা করে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মেহেদী হাসান সরকার কুড়িগ্রাম রাজারহাট তিস্তা এই মহাসড়কটি একটি আঞ্চলিক মহাসড়ক। এই সড়ক দিয়ে সোনাহাট থেকে ভারী যানবাহন চলাচল করে তারেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এ অর্থবছরে রাজারহাট থেকে তিস্তা পর্যন্ত সংস্কার কাজ হাতে নিয়েছি। যেহেতু এখানে ভারি যানবাহন চলাচল করে সেই ক্ষেত্রে এই রাস্তাটি ৫.৫ থেকে ৭.৩ উন্নত করার জন্য কোন একটি প্রোজেক্টের মাধ্যমে কাজটি আরও  করব।

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজারহাট মো. আল ইমরান জানান, কিছুদিন আগে বিষয়টি আমি জেনেছি। সড়ক ও জনপদ বিভাগের এই রাস্তা দিয়ে পাথর বোঝাই ট্রাক সন্ধ্যার পর চলাচল করে। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছিল।

খুব দ্রত সময়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি প্রেরণ করবো। এছাড়া রাজারহাটে বাইপাস সড়কের জন্য কাজ করা হচ্ছে। এতে শহরের ভিতরে যানজটও মুক্ত হবে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে এর একটি সুন্দর সমাধান হবে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147146