সতীর্থ ও কোচদের প্রশংসায় ভাসছেন বগুড়ার ছোল মুশফিক

সতীর্থ ও কোচদের প্রশংসায় ভাসছেন বগুড়ার ছোল মুশফিক

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০টি টেস্ট খেলার ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘ দুই দশকের এই যাত্রায় তার সঙ্গী, সতীর্থ এবং কোচরা তাকে দেখছেন শ্রদ্ধা ও বিস্ময়ের চোখে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত উপলক্ষে ইএসপিএন ক্রিকইনফো-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুশফিকের অধ্যাবসায়, শৃঙ্খলা এবং খেলার প্রতি নিবেদন নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক, ডেভ হোয়াটমোর, চন্ডিকা হাতুরুসিংহে এবং হাবিবুল বাশার।

দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও বন্ধু তামিম ইকবাল মুশফিকের এই অর্জনকে ‘বিশাল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তামিম বলেন, বাংলাদেশের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলার যোগ্যতা যদি কারও থাকে, তবে সে মুশফিক। আমাদের দেশে টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা কম হওয়ায় এই মাইলফলক ছুঁতে তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।

তামিম আরও যোগ করেন, আমি ১৭-১৮ বছর তার সঙ্গে খেলেছি। অনেককে সেঞ্চুরি করার পর ক্লান্ত হতে দেখেছি, কিন্তু মুশফিককে কখনোই বড় ইনিংসের পর ক্লান্ত হতে দেখিনি। তার রানের ক্ষুধা অবিশ্বাস্য। এই ম্যাচে (আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে) সে ২০ রান করুক বা ২০০, তাকে বিচার না করে কেবল উদযাপন করা উচিত।

মুশফিকের ড্রেসিংরুমের সঙ্গী মুমিনুল হক তার শৃঙ্খলার প্রশংসা করতে গিয়ে মজার ছলে বলেন, মাঝেমধ্যে আমার মনে হয় তিনি খুব বোরিং জীবন যাপন করেন। একজন মানুষ খেলার প্রতি এতটা নিবেদিত এবং সুশৃঙ্খল (খাবার, ঘুম সব বিষয়ে) কীভাবে হতে পারেন?

আমরা কখনোই তার মতো হতে পারব না। মুমিনুল জানান, মুশফিক তিন মাস পরের সিরিজের পরিকল্পনাও আগে থেকেই শুরু করে দেন। তিনি বলেন, এই টেস্ট সিরিজের পরপরই হয়তো তিনি পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে কাজ শুরু করবেন, যদিও সেটা তিন মাস পরে। শীর্ষ খেলোয়াড়রা এভাবেই আগাম পরিকল্পনা করেন।

বাংলাদেশ দলের সাবেক কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহে মুশফিককে তার দেখা অন্যতম ‘সূক্ষ্ম ও সুশৃঙ্খল’ ক্রিকেটার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য কেবল তাকে পর্যবেক্ষণ করাই একটি শিক্ষা। সে এমন একজন নেতা যে কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী।

তার প্রস্তুতি বিশ্বমানের। বাংলাদেশ ক্রিকেট তার কারণে সমৃদ্ধ হয়েছে। মুশফিকের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের কোচ ডেভ হোয়াটমোর বলেন, মুশফিক জানতো সে কী অর্জন করতে চায়। উত্থান-পতন এবং চোট কাটিয়ে সে যেভাবে সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তা দেখে আমি খুব খুশি। সাকিব ও তামিমের পাশাপাশি সেও দেশকে গর্বিত করেছেন। তার স্লগ-সুইপ শটটি তো কিংবদন্তিতুল্য!

সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার মুশফিককে ‘মিস্টার ক্রিকেট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, অন্য বড় দলগুলোর মতো বাংলাদেশ খুব বেশি টেস্ট খেলে না, তাই এত বছর ধরে আগ্রহ ধরে রাখাটাই বিশাল অর্জন। অনেক সময় শরীর বা মন বলে ‘আর না’, কিন্তু মুশফিকের ক্ষেত্রে ‘যথেষ্ট হয়েছে’ শব্দটা নেই। সে আমাদের মিস্টার ক্রিকেট, আমাদের মাইক হাসি। তার এই আবেগই তাকে সবার চেয়ে আলাদা করে তুলেছে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/147047