প্লে-ব্যাক নিয়ে শাপলা’র স্বপ্ন

প্লে-ব্যাক নিয়ে শাপলা’র স্বপ্ন

অভি মঈনুদ্দীন ঃ বেশকিছু মৌলিক গান করে শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছেন এই প্রজন্মের গায়িকা শাপলা পাল। চট্টগ্রামে জন্মনেয়া এই নন্দিত শিল্পী স্টেজ শোতে গান গাইতেও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তবে দীর্ঘদিনের সঙ্গীত জীবনের পথচলায় শাপলা’র সবচেয়ে বড় স্বপ্ন বড় ক্যানভাসে গান গাওয়া। অর্থাৎ সিনেমাতে গান গাওয়াই তার স্বপ্ন। তার সমসাময়িককালের অনেক শিল্পী এরইমধ্যে সিনেমাতে প্লে-ব্যাক করেছেন।

সিনেমাতে গান গেয়ে তারা বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন। কিন্তু সঙ্গীত জীবনের চলার পথে হঠাৎ বাবা মারা যাবার কারণে গানে পেশাগত যাত্রা থেকে তাকে কিছুদিনের জন্য বিরতি নিতে হয়। যে কারণে কিছুটা হলেও শাপলা পিছিয়ে পড়েন। বাবার মৃত্যুর পর অনেক চ্যালেঞ্জিং সময়ের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। এরপর অরিজিৎ-এর সঙ্গে বিয়ের পর জীবনে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে। স্বামী, সংসার, সন্তান নিয়ে এক সময় ব্যস্ত হয়ে উঠেন। সবকিছু মোটামুটি স্বাভাবিক করে এই সময়ে এসে কিছুটা স্থিতিশীল পরিস্থিতির মাঝে আছেন তিনি। এখন নতুন নতুন মৌলিক গান নিয়ে পরিকল্পনা করছেন তিনি। সেইসাথে স্বপ্ন দেখছেন ভালো কোনো সিনেমায় প্লে-ব্যাক করার।

শাপলা বলেন,‘ সিনেমাতো সবচেয়ে বড় ক্যানভাসের মাধ্যম। এই মাধ্যমে গান গাওয়ার স্বপ্ন ঠিক যখন থেকে আমি গান বুঝি। কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে আজও তা ব্যাটে বলে ঠিকঠাক মতো হয়ে উঠেনি। জানিনা সেই স্বপ্ন কবে পূরণ হবে। তবে আমার বিশ্বাস ঈশ্বরের আশীর্বাদে হয়তো শিগগিরই সেই স্বপ্ন আমার পূরণ হবে। জানিনা কবে কোথায় কীভাবে তা পূরণ হবে, তবে আমার বিশ্বাস তা হবেই। সেইসাথে এই সময়ে যারা ছায়া হয়ে মাথার উপর আছেন তারা যেন ছায়া হয়ে থাকেন এই প্রার্থনা করি।’

গানের ভুবনে তার পথচলা মা সঞ্জু পালের হাত ধরে। মায়ের কাছেই তার গানে হাতেখড়ি। তবে যেহেতু ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিলো বড় হয়ে গায়িকা হবেন, তাই ছোটবেলা থেকেই শুদ্ধ সুরে সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন তিনি একে একে ওস্তাদ অরুন বণিক, রাখাল নন্দী ও সুরবন্ধু অশোক চৌধুরীর কাছে। মাঝে কিছুদিন চট্টগামের অগ্রনী সংঘ স্কুলেও গানে তালিম নিয়েছিলেন।

২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর অরজিৎ চৌধুরীরের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। একই বছরে তিনি ‘চ্যানেল আই সেরাকন্ঠ’তে অংশগ্রহন করে শীর্ষ দশে চলে আসেন। টপে না যেতে পারলেনও প্রয়াত বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহর তাকে বলা ‘টপটেন পর্যন্ত থাকা মানেই শেষ হয়ে যাওয়া নয়’-এই কথাটি মাথায় রেখে শাপলা গানের ভুবনে অরজিৎ-এর সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে থাকেন।

শাপলার মূল লক্ষ্যই ছিলো মৌলিক গান করার। প্রকাশিত হয় তার প্রথম মৌলিক গান ‘মনের সীমানা’। প্রথম গানেই দারুণ সাড়া মিলে। অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে যান আগামীর পথে। এরপর একে একে আরো প্রকাশিত হয় ‘বৃষ্টি পায়ে’,‘ রাং দে মোরা প্রিয়া’,‘ আমার ঘরে শ্রাবণ ঝড়ে’,‘ মন বলে’,‘ ধোঁয়ার শহর’,‘ বিনয় করিগো প্রিয়’সহ আরো বেশকিছু গান। শাপলা তার নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘শাপলা পাল’-এর জন্য কিছু নতুন মৌলিক গান করছেন।

এরইমধ্যে তারেক আনন্দের লেখা ও খায়রুল ওয়াসীর সুরে ‘তুমি এসো শিশির ভেজা পায়ে’ গানের কাজ শেষ করেছেন। শিগগিরই এই গানের মিউজিক ভিডিও করতে যাচ্ছেন কক্সবাজার কিংবা সিলেটে। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স করার পর দেশের একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে তিনি মিউজিকে এমএস করছেন।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/146664