‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণ সকল ক্ষেত্রে সফলতা আশা করে না’

‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণ সকল ক্ষেত্রে সফলতা আশা করে না’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জটিলতার সৃষ্টির অর্থ একদিকে নির্বাচন না করেই হয়তো রাষ্ট্রের খবরদারির সুযোগ গ্রহণ করা, অপরদিকে রাজতৈনিকভাবে যদি বলতে হয় পরিষ্কারভাবে যা দিবালোকের মতন পরিষ্কার- পতিত, পরাজিত, পলাতক স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের পথকে সুগম করে দেওয়া।

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বুধবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বল্পমেয়াদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণ সকল ক্ষেত্রে সার্বিক সফলতা আশা করে না। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্বও নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণ করেছে। এখন সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি একটি রাজনৈতিক দলের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবে, নাকি দেশের গণতান্ত্রিকামী জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে অগ্রাধিকার বা প্রায়োরিটি তারা দেবে?

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আয়োজিত এই আলোচনা সভায় তারেক রহমান আরও বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের সহযোগীরা গত কয়েক দিনে আমরা দেখছি, খোদ রাজধানীতে যেভাবে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির করণীয় সম্পর্কে এটা একটা সতর্ক বার্তা হতে পারে বলে আমার কাছে মনে হয়। এখনই সবার কাছে স্পষ্ট, ফ্যাসিবাদীবিরোধী আন্দোলনে একটা দল ফ্যাসিবাদের নিষ্ঠুরতা থেকে নিজেদেরকে বাঁচাতে গিয়ে, যেটি তাদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করেছে, যে নিজেদেরকে বাঁচাতে গিয়ে তারা ফ্যাসিবাদের ছাতার নিচে আশ্রয় নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেছিল।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই পতিত, পরাজিত, পলাতক স্বৈরাচার, একইভাবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা সেই দলটির ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছে কি না, মনে হয় এটি আমাদের সকলের দেখার বা ভাবার সময় এসেছে।

তারেক রহমান বলেন, গণভোটের আড়ালে পতিত, পরাজিত, পলাতক অপশক্তিকে রাষ্ট্র রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে কিনা, আমি এ ব্যাপারে মিডিয়ার ভাইদের মাধ্যমে, সম্মানিত আলোচকবৃন্দের মাধ্যমে, সম্মানিত রাজনৈতিক বরেণ্য ব্যক্তির মাধ্যমে, সিভিল সোসাইটির ব্যক্তিদের মাধ্যমে সকলকে এই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য দেশের গণতান্ত্রিকামী জনগণের প্রতি আহ্বান জানাই।

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাজপথের আন্দোলনের সকল সঙ্গীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, এ কথাটি আমি আগেও বলেছিলাম, আজও আবার আপনাদের সামনে আমি তুলে ধরতে চাই। উত্তর কোরিয়ার সংবিধানে লেখা রয়েছে ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া। সংবিধানে লেখা থাকলেই সবকিছু কি নিশ্চিত হয়ে যায়? হয়তো হয়ে যায় না। বাংলাদেশের ইতিহাস কিন্তু তাই বলে কমবেশি। আসলে সবার আগে প্রয়োজন রাষ্ট্র রাজনীতি সম্পর্কে, প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন, প্রয়োজন রাজনৈতিক সমঝোতার, প্রয়োজন গণতান্ত্রিক মানসিকতার, সর্বোপরি প্রয়োজন দেশপ্রেম এবং জাতীয় ঐক্য। দেশ এবং জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং জনসমর্থিত দল হওয়া সত্ত্বেও ফ্যাসিবাদীবিরোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রাখার ব্যাপারে বিএনপি সর্বোচ্চ ছাড় দিয়েছে।

 

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/146294