রংপুরে স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে
সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, রংপুর : বিভাগীয় নগরী রংপুরে স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষ পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। সরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সব জায়গাতেই অভিযোগ অব্যবস্থাপনা, দালালচক্রের দৌরাত্ম্য, চিকিৎসকের অনুপস্থিতি ও অতিরিক্ত ফি আদায়ের। ফলে চিকিৎসা নিতে এসেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
জানা যায়, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এ বিভাগের আট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রতিদিন এখানে গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার রোগী আসেন। সকাল থেকেই টিকিট কাটতে বহি:বিভাগে পড়ে লম্বা লাইন। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় অনেককে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, সকালে বাড়ি থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। দুপুর পার হলেও ডাক্তার আসেননি। অনেক কষ্টে টিকিট কেটেছি, কিন্তু চিকিৎসা পাওয়া দুষ্কর। অপরদিকে হাসপাতালের ভেতর ও গেটে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য যেন নিত্যদিনের চিত্র। রোগীদের বিভিন্ন অজুহাতে বাইরে থাকা ক্লিনিকে নিয়ে যায় তারা। অনেক সময় ব্যয়বহুল পরীক্ষা করানোর প্রলোভনও দেখানো হয়।
এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান, রোগীদের হয়রানির বিষয়টি অনেকটাই রোধ করতে পেরেছি। হাসপাতালের প্রধান সমস্যা হচ্ছে লোকবল। হাসপাতালে লোকবল থাকলে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকেও চলছে নানা অনিয়ম। অতিরিক্ত পরীক্ষার বিল, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ, প্রেসক্রিপশন ও রোগী আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নগরীর শালবন এলাকার গৃহবধু সম্পা হোসেন, ছেলের জ্বর নিয়ে ক্লিনিকে গিয়েছিলাম, তারা নানা পরীক্ষা করিয়ে বিশ হাজার টাকা বিল ধরেছে। পরে দেখি রিপোর্টে কিছুই নেই।
রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা জানান, নিয়মিত ক্লিনিকগুলো মনিটরিং করছি। যেসব ক্লিনিক নিয়ম ভাঙছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে জনগণের সচেতনতা বাড়লে দালালচক্র টিকতে পারবে না।
স্বাস্থ্যসেবা বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী দেলোয়ার হোসেন মনে করেন, রংপুরে সরকারি হাসপাতালগুলোর সেবা ব্যবস্থায় আধুনিকতা ও জবাবদিহিতা আনতে না পারলে জনগণ বেসরকারি খাতে নির্ভর করতেই বাধ্য হবে। এজন্য প্রশাসনের কঠোর তদারকি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/146225