দুপচাঁচিয়া কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

দুপচাঁচিয়া কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। সেই সাথে খেলার মাঠ শৌচাগার লাইব্রেরি না থাকায় ও প্রয়োজনীয় ব্রেঞ্চ সংকটের কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সিমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী শরিফ উদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ১৯৪১ সালে প্রায় ১ একর ১৮ শতক জায়গার উপর চামরুল ইউনিয়নের এই কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ১৯৬৫ সালে বিদ্যালয়টি নিম্ন মাধ্যমিক মঞ্জুরী লাভ করে। ১৯৬৯ সালে উচ্চ বিদ্যালয়ে মঞ্জুরীপ্রাপ্ত হয়।

১৯৯৫ সালের পহেলা জুন বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়। শুরুতেই বিদ্যালয়টি মেড ইন ইংলিশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। সেই সময় ভারতের জলপাইগুড়ি বিভাগের আওতায় বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়। তৎকালীন সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী বিদ্যালয়টি পরিদর্শনও করেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৩ টি ভবন রয়েছে। টিনের ছাউনির একটি পাকা ৩ কক্ষের ভবনসহ পুরাতন টিনের ছাউনী বিশিষ্ট ৫ কক্ষ একটি ভবনে পাঠদান চলছে। পুরাতন এই ভবনে টিনের ছাউনি ফুটা হয়ে গেছে।

একটু বৃষ্টি নামলেই শ্রেণিকক্ষে পানি পরে। এ সময় ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান থেকে বিরত থাকতে হয়। এ ছাড়াও ১৯৯৭ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে নির্মিত ২ কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। পাকা এই ভবনটি দীর্ঘ দিন সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানের পলেস্তার খসে গেছে। ছাদের পলেস্তার উঠে রডগুলো কংকালের মত বেরিয়ে রয়েছে। দরজা জানালার অবস্থাও করুন। ফলে ২০১৬ সালে এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়।

বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৫০ জন। শিক্ষক ১৩ জন আর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে ৪ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরাজ উদ্দিন মিঞা শ্রেণিকক্ষের সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, উপজেলায় অনেক নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন পেলেও দূর্ভাগ্যবশত প্রায় ৮৩ বছরের পুরাতন এই বিদ্যালয়ে কোন ভবন বরাদ্দ পায় নাই। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে তা পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে।

এতে বর্ষাকালে ও প্রখর গরমে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির কথা স্বীকার করে তিনি জানান, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাশের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং নির্ধারিত সময়ে পাঠদান শেষ করতে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আবু জাফর জানান, দীর্ঘ দিনের পুরাতন এই বিদ্যালয়টিতে সরকারি ভাবে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগে নি।

৪ তলা বিশিষ্ট পাকা একটি ভবনের জন্য সাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ বিভিন্ন স্থানে ধর্না ধরে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে দ্রুত ৪ তলা পাকা ভবন নির্মাণ করা খুব জরুরী প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে তিনি শিক্ষা বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টিও কামনা করেন।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/146186